জে, জাহেদ , চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে মো.নাছির(৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ২৪ঘণ্টার মাথায় হত্যাকাণ্ডের মূল আসামী শওকত হোসেন চইল্ল্যা(৪৫) কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

এসময় বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিমসহ ২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

শনিবার (১৬ মে) দিবাগত উপজেলার চরণদ্বীপে বড়ুয়াপাড়া সংলগ্ন বালুর মাঠ এলাকায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

শওকত উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের খলিল তালুকদার বাড়ির হাছি মিয়ার ছেলে। সে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে একই এলাকার নাছির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় আটক হন পুলিশের হাতে। ওই সময় বিপুল পরিমাণের অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের দাবি, মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন’র ছেলে মো.নাছির হত্যা মামলার প্রধান আসামী শীর্ষ সন্ত্রাসী শওকত হোসেন চইল্ল্যার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ওসি আবদুল করিম।

যেভাবে আটক হয় শওকত:
গত শুক্রবার উপজেলার চরণদ্বীপে মোহাম্মদ নাছির (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে একাধিক মামলার আসামী শওকত হোসেন ওরপে চইল্ল্যা ও তার ছোট ভাই জসীমসহ একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। এ সময় নাছিরের পিতা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন ও ছোট ভাই লোকমান আহত হন। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের খলিল তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ জসিম উদ্দিন ও শওকত হোসেনকে আটক করে ও তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি এলজি, ৫ রাউন্ড গুলি, ২টি কার্তুজ, ছুরি, চাপাতি ও দা উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, চরণদ্বীপের বটতল এলাকার বাসিন্দা হাছি মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা আলী মদনের পরিবারের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ রয়েছে। শুক্রবার রাতে এলাকার এক ধনাঢ্য ব্যক্তি খলিল তালুকদার নিজ বাড়িতে যাকাতের টাকা বণ্টন করছিলেন। টাকা বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগ এনে আলী মদনের ছেলে লোকমান প্রতিবাদ করলে হাছি মিয়ার ছেলে জসিমের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে জসিমের ভাই শওকত বাড়ি থেকে বন্দুক নিয়ে এসে লোকমানকে মারধর করতে থাকে। লোকমানকে বাঁচাতে বড় ভাই নাছির ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন এগিয়ে এলে জসিম ও শওকত তাদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন ও তার ছেলে নাছির গুলিবিদ্ধ হন। রাতে আহতদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গুলিবিদ্ধ নাছিরকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ ঘটনায় উপ-পরিদর্শক (এস আই) সুমন কুমার দে বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে এবং নিহত নাছিরের ভাই জয়নাল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

যেভাবে বন্দুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়: পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তিযোদ্ধা আলী মদনের উপর হামলা ও তার ছেলে নাছিরকে গুলি করে হত্যা বিষয়ে আটককৃত সন্ত্রাসী শওকত হোসেন আরো অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করেন।

শনিবার দিবাগত রাতে অতিরক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে বোয়ালখালী থানার ইনচার্জ(ওসি) আব্দুল করিম, এস আই সুমন কুমার দে, এস আই আরিফুর রহমান সরকার, এসআই কুদ্দুছ সঙ্গীয়ফোর্সসহ সন্ত্রাসী শওকত হোসেন চইল্ল্যাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যাওয়ার পথে উপজেলার চরণদ্বীপ বড়ুয়াপাড়া বালুরঘাট এলাকায় সন্ত্রাসী শওকত হোসেন ওরপে চইল্ল্যার বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়লে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে।

এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সন্ত্রাসী শওকত হোসেন ওরপে চইল্ল্যাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ১০টি কার্তুজের খোসা একটি রামদা, একটি চাকু উদ্ধার করা হয়।

এসময় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. নাছির হত্যায় জড়িত আরো একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।