সিবিএন ডেস্ক:
গত ২ মে থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত বার্ন ইউনিটে ১৪৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

শুক্রবার (১৫ মে) ঢামেক হাসপাতাল মর্গের ওয়ার্ডমাস্টার আব্দুল গফুর এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গত ১৩ দিনে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ১৪৪ জন মারা গেছেন।

জানা গেছে, গত ২ মে থেকে বার্ন ইউনিটে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসার জন্য ভর্তি শুরু হয়। এরপর থেকেই সেখানে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। সে অনুযায়ী ১৫ মে পর্যন্ত মোট ১৪৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২৪ জন রোগী হচ্ছে করোনা পজিটিভ।

ঢামেকের করোনা ইউনিটের ইনচার্জ দীপু জানান, বর্তমানে রোগী ভর্তি আছেন ২১০ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ১০ জন। ৯০ জন রোগী কোভিড-১৯ পজিটিভ। গত ২ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছিল প্রায় এক হাজার ২৩৯ এর উপরে। অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছেন। আবার অনেকেই কিছু না বলে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালে যেকোনো রোগী আসলেই সবাই করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া করোনাভাইরাসের আগে আমাদের হাসপাতালে নরমালি প্রতিদিনই মৃত্যু হতো ২৫ থেকে ৩০ জনের। সেই হিসাবে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম।’

পরিচালক আরও বলেন, ‘ঢামেকের নতুন ভবন প্রস্তুত করে ফেলেছি। শনিবার (১৬ মে) থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে। প্রায় ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ কোভিড-১৯ রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন। ঢামেকের করোনা ইউনিটে-২ এর জন্য চিকিৎসক নার্স সবারই রোস্টার করা হয়েছে। ওয়ার্ডবয়রা প্রস্তুত। এছাড়া নতুন চিকিৎসকও আমরা পেয়েছি ১৯২ জন। নতুন নার্স পেয়েছি প্রায় ৫০০ জন। ডাক্তার, নার্স এবং ওয়ার্ডবয়- এখন আমাদের কোনো সংকট নেই।’

জানা যায়, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমিত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য প্রথম সরকার নির্ধারিত চিকিৎসা কেন্দ্র রাজধানী ঢাকার উত্তরার কুয়েত-মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল। পরবর্তী সময়ে কুর্মিটোলা, মহানগর জেনারেল হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। দেশের বড় হাসপাতালগুলোর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ২৯৮ জন মারা গেলেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ২০২ জন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৬৫ জনে।