আলমগীর মানিক,রাঙামাটি :
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে একের পর এক চিকিৎসক-নার্স থেকে শুরু করে আয়া পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হওয়ার ঘটনায় ভেঙ্গে পড়ছে জেলার স্বাস্থ্য সেবা। ইতিমধ্যেই ওটি ইনচার্জ করোনা পজেটিভ হওয়ার প্রেক্ষিতে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে সকল প্রকার সার্জারি অপারেশন (ওটি) বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ৬ই মে থেকে রাঙামাটিতে প্রথম একজন সিনিয়র নার্সের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসার পর ১২ই মে আরো একজনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এরই মধ্যে ১৩ই মে রাতে একজন চিকিৎসক(মেডিসিন বিশেষজ্ঞ)সহ আরো ৪জন স্টাফ নার্স এবং একজন আয়ার নমুনা পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের অস্থিত্ব পাওয়ায় তাদের সংস্পর্শে আসা অন্যান্য সকলকেসহ সর্বমোট ৩২জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বিধায় আপাতত রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের ওটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা। তিনি জানান, হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি থেকে শুরু করে অন্যান্য চিকিৎসা সেবা চলমান আছে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সিজারিয়ান এর জন্য মা ও শিশু হাসপাতাল(মাতৃমঙ্গল)কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সেখানেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
জানাগেছে, জেনারেল হাসপাতালে সর্বমোট ১৮জন চিকিৎসক কর্মরত থাকতেন। হাসপাতাল থেকে সর্বমোট ৬৫ জনের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছিলো। তার মধ্যে ১০জন চিকিৎসক, ৫০ জন নার্স এবং বাকি ৫ জন সাধারণ রোগি বলে বিশ্বস্থ সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানান, বৃহস্পতিবারই রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সসহ সকল স্টাফদের কাছ থেকে শীঘ্রই নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দেশনা এসেছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডাঃ শওকত আকবর খান জানিয়েছেন, এভাবে যদি আমাদের চিকিৎসক ও নার্সসহ আয়াদের করোনা পজেটিভ আসে এবং তাদের সংস্পর্শে থাকাদের যদি আমরা কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করি তাহলে হাসপাতাল চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি জানান, আমাদের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা সেবা চলমান রয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের একজন উদ্বর্তন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতি আরেকটু খারাপের দিকে ধাবিত হতে পারে। যেকোনো সময় একমাত্র চিকিৎসাস্থল জেনারেল হাসপাতাল লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায় এই মুহুর্তে রাঙামাটির প্রায় ৭ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা চলমান রাখতে হলে এখানকার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আরো চিকিৎসক ও নার্স এবং ক্লিনার নিয়োগ দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই অন্যথায় এখানকার দূর্ভোগময় পরিস্থিতির শিকার হতে পারে।
সিভিল সার্জন পদমর্যাদার একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, রাঙামাটিতে নমুনা সংগ্রহের মাত্রা এখনো বাড়ানো হচ্ছেনা। যার কারনে এখনো বুঝা যাচ্ছেনা যে এখানে কি পরিমাণ করোনাবাহি মানুষ চলাফেরা করছে। নমুনা কালেকশন বাড়ানোর পাশাপাশি স্বল্প সময়ের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় ভয়াভহ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হবে রাঙামাটিবাসী।
ডাক্তার,নার্স-আয়া করোনা পজেটিভ : রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে অপারেশন বন্ধ
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।