সিবিএন ডেস্ক:

চট্টগ্রামের বিআইটিআইডি, সিভাসু ও চমেক ল্যাবে ৪২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় আরও ৬১ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৫১ জন নগরের বাসিন্দা ও ১০ জন বিভিন্ন উপজেলার। নতুন শনাক্তদের মধ্যে শিল্প পুলিশের তিন সদস্য, দুই চিকিৎসক ও এক তরুণ সাংবাদিকও রয়েছেন।

এ নিয়ে চট্টগ্রামে দুইদিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন দুই সাংবাদিক। আক্রান্ত সাংবাদিক মিনহাজ মুহী চট্টগ্রামের স্থানীয় নিউজ পোর্টাল ‘সিভয়েস২৪.কমের’ স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ মে) রাতে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।

বিএমএ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নতুন আক্রান্তদের মধ্যে দুইজন নারী চিকিৎসক আছেন। একজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক।

সিভয়েসের চিফ রিপোর্টার আলম দিদার জানান, করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে অফিসিয়াল সিদ্ধান্তে মিনহাজ মুহী বাসা থেকেই কাজ করছিলেন। তবে কদিন ধরে তার জ্বর-সর্দি হলে গত ১০ মে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি করোনার নমুনা জমা দেন। বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত রেজাল্টে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। মিনহাজ বর্তমানে বোয়ালখালীর শাকপুরার নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিআইটিআইডিতে ২৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে ৩৩টি পজিটিভ। মহানগরসহ চট্টগ্রামে মোট ২৯টি পজিটিভ। যার মধ্যে মহানগরের ২৬ জন, উপজেলার ৩ জন (রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালী ও বোয়ালখালী) আছেন। এছাড়া ভিন্ন জেলায় ৪ জন রয়েছেন। রাঙ্গুনিয়ায় আক্রান্ত পুরুষ রোগী সরফভাটার বাসিন্দা।

বিআইটিআইডিতে শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ জন, শিকলবাহার ১ জন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ৩ জন, খেজুরতলা, পতেঙ্গার ১ জন, বড়মা কলোনি বায়েজিদ ১ জন, ফ্রিপোর্ট বন্দরে ১ জন, অক্সিজেন ১ জন, কালাপুল অক্সিজেন ১ জন, পাথরঘাটার ১ জন, কাঠগড়ে ১ জন, নতুন চান্দগাঁও থানরে ১ জন, ফিরিঙ্গিবাজারে ২ জন, ফৌজদারহাটে ১ জন, আলকরণে ৫ জন, বন্দরে ১ জন, চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে ১ জন, মেয়রগলির ১ জন, ফিরোজশাহ কলোনির ১ জন, বিআইটিআইডির ১ জন, বোয়ালখালীর ১ জন, রাঙ্গুনিয়ার ১ জন ও বাঁশখালীর ১ জন আছেন।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটিতে (সিভাসু) ৭১টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ১৭টি পজিটিভ। এর মধ্যে চট্টগ্রামের পটিয়ার ৬ জন। সিভাসুর ল্যাবে ভিন্ন জেলার ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

পটিয়ায় নতুন শনাক্তদের মধ্যে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব টেকনিশিয়ান ও করোনাভাইরাস পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা এক স্বাস্থ্যকর্মীর ২ বছর ৮ মাস বয়সের এক শিশুপুত্র ও বৃদ্ধ পিতা (৭৫) আছেন। এছাড়া পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী নারী ও তার ১ বছর ৩ বয়সী পুত্রসন্তানও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত স্বাস্থ্য সহকারীর স্বামী পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।

নতুন আক্রান্ত অন্য দুইজনের বাড়ি পটিয়া পৌর সদরের ৮ নং ওয়ার্ডের গোবিন্দরখীল এলাকায় তাদের একজনের বয়স ২১ বছর ও অন্যজনের ৩০ বছর। তারা দুইজনই করোনা পটিয়ায় আক্রান্ত যুবক ব্যবসায়ীকে পটিয়া থেকে চট্টগ্রাম শহরে মেডিকেলে নিয়ে গিয়েছিল।

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয় বৃহস্পতিবার। এরমধ্যে চট্টগ্রামের ২৬টি পজিটিভ। মহানগর এলাকায় ২৫টি ও উপজেলায় ১টি। শনাক্তদের মধ্যে রয়েছেন- নিউমুরিং এলাকার ১৮ বছর বয়সী নারী, ফিরঙ্গিবাজারের ৭১ বছর বয়সী পুরুষ, হালিশহরে ৮৫ বছরের বৃদ্ধ, ডবলমুরিং এলাকার ৫৫ বছর বয়সী পুরুষ, লালখানবাজারের ৫০ বছর বয়সী নারী, কর্ণফুলীর ৬০ বছর বয়সী পুরুষ, চান্দগাঁও এলাকার ৪৫ বছর বয়ষী পুরুষ, চমেক হাসপাতালের ৩৬ বছর বয়সী এক নারী ডাক্তার, পতেঙ্গার ৩৩ বছর বয়সী পুরুষ ও একই এলাকার ৩৭ বছর বয়সী নারী, নন্দনকানন এলাকার ৭৫ বছর বয়সী পুরুষ, চকবাজারের ২৭ বছর বয়সী এক নারী ডাক্তার, অক্সিজেন এলাকার ২৭ বছর বয়সী পুরুষ, কোতোয়ালীতে ৫২ বছর বয়সী নারী, ১৬ বছর বয়সী তরুণী ও ৪৫ বছর বয়সী নারীসহ তিনজন, গোসাইলডাঙ্গার ২৩ বছর বয়সী যুবক ও একই এলাকার ৫৫ বছর বয়সী পুরুষ, আসাদগঞ্জের ১৭ বছর বয়সী নারী, আগ্রাবাদের ৫৩ বছর বয়সী নারী, টেরীবাজারের ৬২ বছর বয়সী পুরুষ, কোরবানীগঞ্জের ৪৩ বছর বয়সী পুরুষ, বাকলিয়ার ৭২ বছর বয়সী পুরুষ, ৩৩ বছর বয়সী এক পুরুষ ও রাঙ্গুনিয়ার ৩৮ বছর বয়সী পুরুষ করোনায় আক্রান্ত।

অন্যদিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার ৩০টি নমুনা পরীক্ষা করে সবই নেগেটিভ পাওয়া গেছে।