আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
করোনাভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশের পর দ্রুত এর পরিবর্তন ঘটে। গবেষকরা বলছেন, দেহে টিকে থাকার জন্য এই পরিবর্তন ভাইরাসটিকে আরও দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে সহায়তা করে।

দ্য লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন ভাইরাসের এ পরিবর্তন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। কারণ পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবাণুগুলো মানুষের দেহে আরও সফলভাবে নিজেদের অস্তিত্বের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।

বিশ্বের প্রায় ৬২টি দেশ থেকে করোনাভাইরাসের ৫ হাজার তিনশর বেশি জিনগত বৈশিষ্ট্য সংগ্রহ করে সেগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসের বেশকিছু পরিবর্তন দেখতে পেয়েছেন যার মাধ্যমে মানুষের দেহে ভালোভাবেই টিকে থাকতে পারে ভাইরাস।

বিশেষজ্ঞদের একটি দল ভাইরাসটির গায়ের কাঁটার মতো দেখতে ‘স্পাইক প্রোটিনে’র মধ্যে পরিবর্তন শনাক্ত করতে পেরেছেন। স্পাইকগুলোর পরিবর্তনের ফলে ভাইরাসটির বৃদ্ধি আরও দ্রুত ঘটেছে।

ওই গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক মার্টিন হিবার্ড বলেন, এই ভাইরাসগুলোর পরিবর্তনে খুব বেশি পার্থক্য থাকে না। এগুলো পরিবর্তিত হলেও একটির সঙ্গে আরেকটির অনেকটাই মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

তার মতে, ভাইরাস মানুষের দেহে পরিবর্তনের মাধ্যমে ভালোভাবে টিকে থাকছে। ভাইরাস শনাক্ত এবং ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই জিনিসগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এ ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন বা টিকা আবিষ্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো ভাইরাসটির গঠনগত কাঠামোর ছোট ছোট পরিবর্তনগুলোতে নজর দেওয়া। এই ভাইরাস দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হলে তা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করবে।

এর আগে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জেনেটিকস ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে যে, নতুন করোনাভাইরাস সার্স-কোভ-২ উৎপত্তি হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ বার জিনগত রূপান্তর ঘটিয়েছে। পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসটি কীভাবে মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে সেটিও গবেষকদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ধরনের ডিএনএ পরিবর্তনশীল। এই পরিবর্তন সব সময় খারাপ নয়। তারা বলছেন, এই পরিবর্তনটা আসলে প্রাকৃতিক।

ভাইরাস কত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। অনেক ক্ষেত্রে এই ভাইরাসগুলো বার বার পরিবর্তিত হলেও তাদের মধ্যে বড় ধরনের কোনো পার্থক্য থাকে না। সেক্ষেত্রে এটা ততটা শক্তিশালীও হয়ে ওঠে না। তাই ভাইরাসের এই পরিবর্তন নিয়ে খুব একটা আতঙ্কের কিছু নেই।