নিজস্ব প্রতিবেদক:

১৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন টমটম গাড়ির ধাক্কায় মারাত্মকভাবে আহত হওয়া এক ব্যক্তি। নিহত ব্যক্তি কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া ৪নং গলি এলাকার মৃত কালা মিয়ার ছেলে আবদুল মালেক (৫৫)। বুধবার (৬ মে) সকালে তিনি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সমিতিপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯ এপ্রিল সকাল ৯ টায় সমিতিপাড়া বাজার থেকে ফেরার পথে একই এলাকার শামসুল আলমের ছেলে ফারুকের মালিকানাধীন টমটম পেছন থেকে ধাক্কা দেয় আবদুল মালেককে। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ড্রেনে পড়ে যান।এসময় ফারুকের ভাই বাবু টমটমটি চালাচ্ছিলেন। ঘটনার সময় আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। আহত ব্যক্তি অত্যন্ত গরীব ও অসহায় হওয়ায় ৩ দিন হাসপাতালে ভর্তি রাখা হলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে তার পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে।

আহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন ও স্হানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর আকতার কামালকে জানালে তিনি আহত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দেন ধাক্কা দেওয়া টমটম গাড়ির মালিক ফারুককে। আহত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে তখন বিচার বসানোর কথা বলেন স্থানীয় কাউন্সিলর। গাড়ির মালিককে চিকিৎসার দায়িত্ব দেওয়া হলেও তার অবহেলায় চিকিৎসার অভাবে মারা যান আহত ব্যক্তি এমনদাবী করেন তার পরিবার ও সমাজের লোকজন।

নিহতের ছেলে মো.করিম জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে ৩ দিন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তার বাবা। টাকার অভাবের কারণে চিকিৎসা করাতে না পারায় বাবাকে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে বিষয়টি কাউন্সিলরকে জানাই। আজ-কাল করে বিচারের অপেক্ষা করতে করতে চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন আমার বাবা। বাবার দুর্ঘটনার পর টমটমের মালিক ফারুকের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি চিকিৎসার বিষয়ে কোন খোঁজখবর নেননি। তাই বাবাকে হারাতে হয়েছে।

মো.করিম আরো জানান, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ফারুক তাদের বাসায় এসে তড়িঘড়ি করে তার বাবার দাপনের ব্যবস্হা করেন এবং বলেন দাপনের পরে সন্ধ্যায় বসে বিষয়টি স্হানীয়ভাবে সমাধান করবেন। আর এই ব্যাপারে কাউকে যেন কিছু বলা না হয়। বাবার মৃত্যুর তিনদিন অতিবাহিত হলেও টমটম মালিক ফারুক এখন আর বিষয়টি নিয়ে বসার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। উল্টো ধমক দিচ্ছেন এই ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়ি করলে এলাকা ছাড়া করবেন বলে।

এদিকে, মৃতের ছেলে তার বাবাকে হত্যার বিষয়ে টমটম চালক ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি এবং ভবিষ্যতে যেন কোন মানুষ টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা না যান সেজন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসআই এম আকতার কামাল জানান, দুর্ঘটনার বিষয়টি স্থানীয়রা আমাকে জানালে টমটম মালিক ফারুককে আহতের চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়ার কথা বলি এবং চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মীমাংসায় বসবো। এরপর থেকে ফারুক আমার সাথে আর যোগাযোগ রাখেনি।

এবিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এঘটনার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি তবে কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।