মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন কাদের:

কক্সবাজারের রামুর ঈদগড় বাজারে ইজারাবিহীন টোল আদায়, খোয়াল ও হাট-বাজার নিলাম দিয়ে দরিদ্র জনসাধারণকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

এমনকি শাক সবজি বিক্রি করতেও টোল দিতে হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

ইউনিয়ন পরিষদের নাম ব্যবহার করে এসব আইন বহির্ভুত কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ে দরিদ্র জনসাধারণ ও প্রান্তীক কৃষক-শ্রমিকরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, ঈদগড়-ঈদগাঁও প্রধান সড়কে আমদানি-রপ্তানি টোল আদায়ে নেই কোনো স্থায়ী ও সঠিক নিয়ম। যা চলছে মনগড়া। অনেক সময় টোল নিলেও দেয়া হয়না আদায় রশিদ। তদারকির অভাবে চলছে লাগামহীন অনিয়ম।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে দেশের জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে পুরো দেশ লক ডাউন ঘোষণা করে সরকার। সরকারি নিদর্শনা মোতাবেক অসহায় মানুষের দোরগোড়ায় সরকারি সহায়তা পৌঁছে দিতে দেশের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। সেই মূহুর্তে বিভিন্ন অনিয়ম করে আমদানি রপ্তানি টোল, খোয়াল ও হাট-বাজার নিলামের নামে স্থানীয় জনসাধারণকে শোষণ করা হচ্ছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।

আবদুর রশিদ নামের এক কৃষকের অভিযোগ, সরকার যখন কৃষকদের ভর্তুকি দিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর সাহায্য করছে, ঠিক তার উল্টো তাদের কাছে ছাড় পাচ্ছেনা কৃষক, মজুররা। এমন কি কৃষকের নিজের চাউল পিকাপভ্যানে করে অন্যত্রে নিতেও গুনতে হয় ৮থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তাও আবার ইউনিয়ন পরিষদের টোকেনের মাধ্যমে। এমনকি উৎপাদিত বিভিন্ন তরিতরকারি’র ওপর অনিয়ন্ত্রিত টোল আদায় করতে দেখা যায়।

তিনি জানান, অসহায় কৃষকরা অতিষ্ঠ হয়ে তরিতরকারি উৎপাদন বন্ধ করতে অনেকটা বাধ্য হচ্ছে।

দূর্বল কৃষক হলে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী নুরুল আলম জানান, স্বাধীনতার ৪৯ বছরের মধ্যে ঈদগড়ে কখনো চাউলের টেক্স নেওয়া হয়নি। বর্তমানে একটি কুচক্রী মহল সরকারে ভাবমূর্তি নষ্ট করতে যেন মহাযুদ্ধে নেমেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের করোনা দূর্যোগে অসহায় মানুষের কল্যাণে সব কিছুই করে যাচ্ছেন। কিন্তু এসব কিছু কুচক্রীবাজদের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়েস বাঙ্গালী জানান, মহামারীতে ইজারা দেওয়া আইন সঙ্গতিপূর্ণ কি না দেখার বিষয়। চাউল থেকে টোল আদায়ের বিষয়ে অনেক কৃষক তাকে অভিযোগ করেছেন।

তিনি জানান, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে অবগত করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কায়েস বাঙ্গালী।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ ভুট্টো চাউলের টোল ব্যাবসায়ীদের জন্য ।কৃষকদের জন্য নয় বলে জানান।

মোহাম্মদ আলম নামের একজনকে খোয়ালের ইজারা দেওয়া হয়েছে। টোলের রশিদে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরে ০১৮৫৫-৬৭৯২৩১ যোগাযোগ করলে পাওয়া গেল সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বারকে। এমনকি খোয়াল পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে আব্দুর রহিম নামে ব্যক্তিকে।

এবিষয়ে মহিলা মেম্বারের নিকট জানতে চাওয়া হলে যথাযথ কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী মাস্টার সৈয়দ করিম জানান, তার চারটি গরু আব্দুর রহিমের ধানক্ষেতের পাশ থেকে ধরে নিয়ে  খোয়ালে দিয়ে দেয় এবং জোরপূর্বক টাকা আদায় করে।

এসব অনিয়ম-হয়রানি থেকে পরিত্রাণ চায় সর্বস্তরের জনগণ।