সিবিএন ডেস্ক:

ফুফু ছকিনা চেয়েছিলো তার ছেলে আরিফের সাথে ভাইয়ের মেয়ে চম্পা (১৯) এর বিয়ে দিবেন। কিন্তু তার অজান্তেই ভাই মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়। এই খবর পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ফুফু ও ফুফাতো ভাই আরিফ। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও ফুফু ও ফুফাতো ভাই হাল ছাড়েনি! তারা বিবাহিত চম্পাকে নিয়ে যেতে চায়। এমন পরিকল্পনা থেকেই তাবিজ করে প্রায় দুই মাস আগে বিবাহিত চম্পাকে নিজের চট্টগ্রামের নিজের বাসায় নিয়ে যায় ফুফু ছকিনা। পরে তাবিজের গুণাগুণ শেষ হয়ে যাওয়ায় চম্পা বাড়িতে চলে আসার জন্য অস্থির হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত কারো বাধা না নেমে চলে আসতে চাওয়ায় তাকে ফুফু ও তার ফেলে মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন- অভিযোগ করেছেন চম্পার বাবা খরুলিয়ার রুহুল আমিন।

৬মে বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় চকরিয়ার কোনাখালী ইউনিয়ন এলাকার বিশ্ব রোডে চলন্ত গাড়িতে হত্যা করে রাস্তায় লাশ ফেলে দেয়া তরুণী চম্পার। মেয়ের লাশ উদ্ধারের পর সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন বাবা রুহুল আমিন।
তরুণী চম্পার বাবা বাবা রুহুল আমিন বলেন, আমার বোন ও ভাগিনা তাবিজ করে আমার মেয়েকে চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়েছিল দুইমাস আগে। তাবিজের কার্যকারিতা শেষ হয়ে যাওয়ায় মেয়ে চম্পা বুধবার (৬ মে) বিকালে কক্সবাজারে চলে আসছিল। আমার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে করতেই আসছিল। কিন্তু কেরাণীহাট আসার পর তার সাথে শেষ যোগাযোগ হয়। তারপর আর কথা বলতে পারিনি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেয়ের লাশের খবর পাই।

রুহুল আমিন বলেন, সিএনজি নিয়ে আমার মেয়ে কক্সবাজারের দিকে রওয়ানা দিয়েছিল। কথা ছিল ওই সিএনজি চকরিয়া পর্যন্ত আসবে। সেখান থেকে তাকে অন্য গাড়িতে কক্সবাজারের খরুলিয়ায় নিজের বাড়িতে নিয়ে আসবো। আমি সিএনজি ভাড়া করে চকরিয়ায় অপেক্ষা করছিলাম মেয়ের জন্য। মোবাইলে যখন আর যোগাযোগ করতে পারছিলাম না, তখন এদিক ওদিক খুঁজেছি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মানুষের কাছে খবর পাই, ওখানে (কোনাখালী) একটি মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে দেখি, মেয়ে আমার লাশ হয়ে পড়ে আছে।

ট্রলি (ভটভটি) চালক রুহুল আমিন জানান, তার বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায়। সেখান থেকে এসে কক্সবাজারের খরুলিয়ার কোনার পাড়ায় বিয়ে করে সংসারি হয়েছেন। তিনি নিজে জমি কিনে ঘর করেছেন। তিনি এক মেয়ে ও তিন ছেলের বাবা। আর মেয়ে চম্পা ছিল সবার বড়। প্রায় ৫ মাস আগে রামু উপজেলার তেচ্ছিপুল এলাকার ফরিদ আলমের ছেলে শাহআলমের সাথে মেয়ের বিয়ে দেন। বিয়ের পর তাদের সংসারও ভালোই চলছিল।

কিন্তু বিয়ের দুই মাসের মাথায় চট্টগ্রামে থাকা তার বোন (মেয়ের ফুফু) ছখিনা জানতে পারে, মেয়েকে আমি অন্যত্র বিয়ে দিয়েছি। এই খবরে সে আমার সাথে রাগারাগি করে, তার ছেলের সাথে কেন মেয়েকে বিয়ে দিলাম না, এ নিয়ে ঝগড়াও হয়। তারও প্রায় একমাস পর মেয়ে চম্পা স্বামীর সাথে রাগারাগি করে ফুফুর বাড়ি চট্টগ্রামে চলে যায়।

রুহুল আমিনের দাবি, তাবিজ করে তার মেয়েকে নিয়ে গেছে বোন ছখিনা। মেয়েকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার তিনদিন পর তিনি শহরে প্রি-পোর্ট এলাকার বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন মেয়েকে আনতে। কিন্তু বোন ছখিনা ও ভাগিনা আরিফ তাকে মারধর করে ঘর থেকেই বের করে দেয়। তিনি কক্সবাজার চলে আসেন। তার মতে, ওই ঘটনার দুই মাস পর তাবিজের গুণ (কার্যকারিতা) নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসছিল। মোবাইলে কথা বলে সিএনজিতে রওয়ানা দিয়েছিল। মাঝপথে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এ জন্য বাবা রুহুল আমিন নিজের বোন ছখিনা খাতুন ও ভাগিনা আরিফকে দায়ী করছেন। তিনি মনে করেন, তার মেয়েকে নিজের ছেলের সাথে বিয়ে দিতে না পারায় বোন ছখিনা ও ভাগিনা আরিফ নিজেরা, নয়তো মানুষ দিয়ে হত্যা করেছে।