সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোজাদারের ইফতারের রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও পুরস্কার। ইফতারে দেরি না করে সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করার কথা বলেছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

যথা সময়ে রোজাদারের ইফতারের সঙ্গে  ইসলামের বিজয় লাভের সম্পর্কও জড়িত। কেননা ইফতারে দেরি করা হলো ইয়াহুদি ও নাসারাদের স্বভাব। আবার ইফতারের সময় রোজাদারের জন্য ফেরেশতারা করতে থাকেন রহমতের দোয়া। সে কারণে ইফতারের রয়েছে বিশেষ বরকত ফজিলত ও পুরস্কার। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বর্ণনায় ওঠে এসেছে সেসব-

– হজরত সাহল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মানুষ যতদিন পর্যন্ত তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে।’ (বুখারি, মুসলিম)

– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যতদিন মানুষ তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন দ্বীন ইসলাম বিজয়ী থাকবে। কেননা, ইয়াহুদি ও নাসারাদের অভ্যাস হলো ইফতার দেরিতে করা।’ (আবু দাউদ)

>> ইফতারের সময় রোজাদারের জন্য ফেরেশতাদের রহমত কামনা

– হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদ বিন মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহুর এখানে ইফতার করেন, অতপর বলেন- ‘তোমাদের এখানে রোযাদারগণ ইফতার করেছেন, নেককারগণ তোমাদের খাদ্যদ্রব্য আহার করেছেন এবং ফেরেশতাগণ তোমাদের জন্য রহমাত কামনা করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ)

– হজরত উম্মু উমারাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের এখানে আসলে আমরা তাঁর সামনে খাদ্যসামগ্রী পরিবেশন করলাম। তাঁর সাথের কতক লোক ছিল রোযাদার। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- ‘রোযাদারের সামনে আহার করা হলে ফেরেশতাগণ তার জন্য (আল্লাহ্‌র) অনুগ্রহ কামনা করেন।’ (ইবনে মাজাহ)

ইফতার হলো মহান আল্লাহর পুরস্কার

রোজাদারের জন্য সবচেয়ে বড় সুসংবাদ বা আনন্দের মুহূর্ত হলো ইফতারকালীন সময়। হাদিসে কুদসিতে এ কথা বর্ণনা করেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। যাতে রোজাদার আনন্দের সঙ্গে সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে। হাদিসে কুদসিতে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতেবর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বনি আদমের প্রত্যেকটি আমল বৃদ্ধি করা হয়। আর প্রতিটি নেকি দশ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, সিয়াম (রোজা) ব্যতিত। কেননা সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্যই; এবং আমিই তার প্রতিদান দিব। বান্দা আমর জন্যই তার কামনা-বাসনা ও পানাহার ত্যাগ করে। রোজাদারের দু’টি আনন্দ। একটি ইফতারির সময় আর অপরটি কেয়ামাতে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন তাঁর কসম! রোজাদারের মুখের গন্ধ কিয়ামাতের দিন আল্লাহর নিকট মেস্কের চেয়েও বেশি খোশবুদার। (বুখারি ও মুসলিম)

সুতরাং ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও পুরস্কার অর্জন করা প্রত্যেক রোজাদারের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর আমল করে রমজানের রহমত মাগফিরাত ও ক্ষমা লাভের তাওফিক দান করুন। ইফতারের বরকত, কল্যাণ, ফজিলত ও পুরস্কার লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।