মো.জয়নাল আবেদীন টুক্কু :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত রোগী জান্নাতুল হাবিবার ১১ দিন পর ২য় করোনা পরিক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। তাই ঐ মহিলা এখন সুুস্থ হওয়ার পথে। এবিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালের প.প. কর্মকর্তা ডাঃ এ.জেড ছলিম এ প্রতিবেদককে জানান হাসপাতালের আইসোলেশনে নিবিড় পর্যবেক্ষনে গাইড লাইন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ার পর মঙ্গলবার ৬ এপ্রিল হাবিবার দ্বিতীয় বার করোনা পরিক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয়।

৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঐ মহিলার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। দুই দিন পর আবারো নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হবে পরিক্ষার জন্য কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে । তৃতীয়বার ও যদি করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে কর্তৃপক্ষের নিদের্শে বা নিয়ম অনুযায়ী তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।

জানা যায় গত ২৭এপ্রিল কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে জান্নাতুল হাবিবার করোনা পরিক্ষায় রিপোর্ট পজেটিভ হয়। তবে আসল নাম হাবিবা না দিয়ে বুদ্ধিমান এ মহিলা নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে আলম আরা স্বামী জামাল হোসেন নাম লেখান রেজিষ্টার খাতায়।

এই নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য বিভাগ জুড়ে শুরু হয় ধুম্রজাল। তাই রোগী সনাক্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাদ্বন্ধে পড়ে সংশ্লিষ্টরা।

পরে ঠিকই সচতুর নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতাল ল্যাবের টেকনিশিয়ান এ্যানি চাক নমুনা সংগ্রহ করার সময় তাকে চেনে বিধায় তিনি এবং কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার অভিজিত চক্রবর্তী ঐ মহিলার ছবি দেখে শনাক্ত করে স্বাস্থ্য টিমের মাধ্যমে হাসপাতালের আইসোলেশনে নিয়ে আসেন। এর পর হইতে আইসোলেশনে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হলে সে আস্তে আস্তে সুস্থ্যের পথে আসা শুরু করে।

স্থানীয় মেম্বার আলি হোসেন জানান
২৭ এপ্রিল বিকালে হাবিবার টেষ্টে পজেটিভ রিপোর্ট আসার খবর নাইক্ষ্যংছড়িতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির বসতবাড়ি ও আশপাশের এলাকার অবস্থা জানে ২ টি বাড়ী লকডাউন করে দেন উপজেলা প্রশাসন।

এছাড়াও ঐ নারী নাইক্ষ্যংছড়ি সোনালী ব্যাংকে লেনদেন করায় ৪ দিন ধরে লকডাউন ছিল সোনালী ব্যাংক নাইক্ষ্যংছড়ি শাখাও। এর পরে ব্যাংকের ৯ কর্মকর্তা কর্মচারীর করোনা পরীক্ষা নেগেটিভ আসায় ব্যাংকের লকডাউন খোলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে হাবিবার সংস্পর্শে আসা আরো তিন জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরা হলেন হাবিবার ননদ জামাল হোসেনের স্ত্রী আলম আরা, মেয়ে শহিদা (১৮)ও ছেলে রবিউল হাসান (৫) এছাড়াও হাবিবার সাথে আইসোলেশনে রয়েছে তার দুই বছরের এক শিশু ।

উল্লেখ্য এর আগে বান্দরবানের প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীটি ছিল নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু কোনার পাড়া গ্রামের। ওই রোগীর শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

১০ দিন পর গত রবিবার তিনি সুস্থ্য হয়ে করোনাকে পরাজিত করে বাড়ি ফিরেছেন। আজ পর্যন্ত আবু ছিদ্দিকসহ নাইক্ষ্যংছড়িতে করোনা রোগীর সংখ্যা দাড়ায় ৫ জনে।