মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

সরকারের নির্বাহী আদেশে সাধারণ ক্ষমা পেয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে আরো ২ জন বন্দী মুক্তি পেয়েছে। সোমবার ৪ মে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

বিষয়টি কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মোঃ মোকাম্মেল হোসেন সিবিএন-কে জানিয়েছেন। এনিয়ে মোট ৯ জন বন্দীকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হলো।

তিনি আরো জানান, ৩ দফে ৩ ক্যাটাগরীর বন্দীকে সারাদেশের প্রায় ৩ হাজার বন্দীকে সরকার নির্বাহী আদেশে সাধারণ ক্ষমা করে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ২ দফায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে ৯ জন বন্দী মুক্তি পেলো।

এর আগে করোনা ভাইরাস (COVID-19) এর কারণে দেশের সকল আদালত বন্ধ থাকায় দেশের কারাগার গুলোতে বন্দী জট চরম আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় সরকার কিছু বন্দীকে সাধারণ ক্ষমা করে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার আওতায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে ৩ ক্যাটাগীরর মোট ৩২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কক্সবাজার জেলা কারাগার হতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ প্রেরণ করা হয়। এ সুপারিশের প্রেক্ষিতে সাজাপ্রাপ্ত ৯জন বন্দী, কিন্তু তাদের সাজার মেয়াদ আর মাত্র ৬ মাসের কম রয়েছে, এধরনের ৯ জনকে শনিবার ও সোমবার মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে কারাগারগুলোতে চাপ কমাতে বন্দীদের এই মুক্তি দেওয়ার শুরু করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। সারা দেশের কারাগারগুলো থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কয়েকটি ধাপে মোট ২ হাজার ৮৮৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, যাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা সবাই লঘু দণ্ডে দণ্ডিত। সর্বোচ্চ এক বছর যাদের সাজা, তারাই এই তালিকায় রয়েছেন। তালিকা করা বন্দীদের ছয় মাস থেকে এক বছর, তিন মাস থেকে ছয় মাস এবং শূন্য থেকে তিন মাস—এই তিনটি ভাগে ভাগ করে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

সারা দেশে ৬৮টি কারাগার রয়েছে। এসব করাগারের ধারণক্ষমতা ৪১ হাজার হলেও ৮৫ হাজারের বেশি বন্দী অবস্থান করছেন। বিচারাধীন কোনো মামলার আসামিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। যারা মুক্তি পাচ্ছেন, তারা সবাই সাজাপ্রাপ্ত। বিচার শেষে তাদের সাজা সর্বোচ্চ এক বছর পযর্ন্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল। কেউ হয়তো এক মাস জেল খেটেছেন, কেউ হয়তো ৯ মাস। এ ক্ষেত্রে শিশু অপহরণ, ধর্ষণ বা হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের অন্য কোনো মামলায় তাদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।

কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী কিছু বন্দিকে মুক্তি দেওয়া যায় কিনা, এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কারা অধিদপ্তর পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় থেকে সেই চিঠির অনুমতিসাপেক্ষে কক্সবাজার জেলা কারাগার সহ সারা দেশের জেল থেকে প্রায় তিন হাজার কয়েদিকে প্রাথমিকভাবে মুক্তি দিচ্ছে কারা অধিদপ্তর।