জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চালুর মাত্র তিন দিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেলো চট্টগ্রাম-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের স্পেশাল পার্সেল ট্রেন। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি ছুটির মধ্যেও জরুরি কৃষিপণ্য, শাকসবজি, স্টেশনারী সামগ্রীসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী পরিবহনের জন্য পার্সেল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। শুরুর দিন থেকে তেমন সাড়া না পাওয়ায় প্রতিদিনই ট্রেনের প্রায় বগি খালি যাচ্ছে। এতে রেলে লোকসান বাড়ছে। তাই রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের পার্সেল ট্রেন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয় রেল ভবন থেকে।

এদিকে গত ২ মে এই ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখবো- পার্সেল ট্রেন চালু রাখা যায় কিনা! যদি সাড়া পাওয়া না যায় তাহলে বন্ধ করে দেবো।’ তার পরদিনই (রবিবার ৩মে) চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের পার্সেল ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জে-ঢাকা রুটের পার্সেল ট্রেন বাতিল করে রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন এই রুটের ট্রেনটি ঢাকা-ভৈরব-ময়মনসিংহ রুটে চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ট্রাফিক বিভাগের এসিস্ট্যান্ট সুপারেন্টেন্ড মোঃ শাহাবুদ্দিন।

তিনি জানান, রেল ভবন থেকে আমাদেরকে জানানো হয়েছে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের পার্সেল ট্রেন বন্ধ করার জন্য। আমরা সেটা পাহাড়তলী কন্ট্রোলসহ স্টেশন ম্যানেজারকে জানিয়ে দিয়েছি। ঢাকা-ভৈরব-ময়মনসিংহ রুটের ট্রেনটি ঢাকা থেকে প্রতিদিন সকাল ১০ টায় ছাড়বে এবং ময়মনসিংহ থেকে সন্ধ্যা ৭ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়া হবে।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের পার্সেল ট্রেন বন্ধের জন্য আমাদেরকে জানানো হয়েছে। সোমবার থেকে আর চলবেনা। আজ রবিবার সকাল দশটায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া ইঞ্জিনসহ ছয়টি কোচের মধ্যে মাত্র একটি কোচের অর্ধেকে কিছু পণ্য গেছে। সাড়ে ৪ কোচ খালি গেছে। অর্ধেক কোচে যে সব পণ্য পরিবহন করা হয়েছে তার মধ্যে ১৩ পিস ডোর শাটার গেছে লাঙ্গলকোট, দুই বস্তা ঝাড়ু গেছে ভৈরব, পাঁচ বস্তা শুটকি গেছে নরসিংদী, দুই কাটন মাছ গেছে ঢাকা এবং ৩ বস্তা রাবারের স্যান্ডেল গেছে ভৈরব।

এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, আমাদেরকে জানানো হয়েছে চট্টগ্রাম-ঢাকা-রুটের পার্সেল ট্রেন না চালানোর জন্য। আজকে রবিবার যেটা সকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা গেছে সেটা রাত্রে ছেড়ে চলে আসবে। সোমবার থেকে আর চলবেনা। বিষয়টি আমরা স্টেশনগুলোকে জানিয়ে দিয়েছি।

গত ১মে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে একজোড়া, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জে একজোড়া এবং ঢাকা-খুলনা-ঢাকা রুটে একজোড়াসহ মোট তিন জোড়া স্পেশাল পার্সেল ট্রেন চালু হয়। তবে ঢাকা-খুলনা-ঢাকা রুটের পার্সেল ট্রেন আপাতত চালু থাকবে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে একটি কন্টেনার ট্রেন, এবং চট্টগ্রাম সাইলো থেকে খাদ্যবাহী ট্রেন চালানো হলে সাড়ে ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হয় রেলওয়ের। সেখানে খরচও কম। কিন্তু পার্সেল ট্রেনে প্রায় ১২ জনের মতো স্টাফ থাকে। তেল খরচ আছে। স্টাফদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ আছে। ৬০ হাজার টাকার তেল লাগে। তাতে ১ লাখ টাকাও আয় হচ্ছে না।