মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজারে জেলায় ৩০ এপ্রিল সনাক্ত হওয়া ১৩ জন করোনা ভাইরাস রোগীর ৮ জনকে রামু’র ডেডিকেটেড আইসোলেশন কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। চকরিয়ার ৪ জন সেল্ফ আইসোলেশনে থাকছেন। রামু’র একজন মহিলা রোগী মারা গেছেন।

রামু’র ডেডিকেটেড আইসোলেশন কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাদের পাঠানো হয়েছে, তারা হলেন-কক্সবাজার সদর উপজেলার কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাজের পাড়া এলাকায় কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সেতুর বাড়ির পাশের বাসিন্দা। সে সদ্য ঢাকা ফেরত। ২য় জন খুরুস্কুল ইউনিয়নের টাইমবাজার এলাকার বাসিন্দা। সে গত ২৭ এপ্রিল কভার্ড ভ্যানে করে ঢাকা থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম আসে। চট্টগ্রাম থেকে পরে ভেঙ্গে ভেঙ্গে কক্সবাজার আসে। ৩য় জন হচ্ছে, একজন সেলুন শ্রমিক। সে হলিডে মোড়ে বসবাস করে। তার স্থায়ী বাড়ি টেকনাফে। সে প্রায় একদশক ধরে সরকারি একটি সংস্থার সদস্যেদের চুল কাটে আসছে।

চতূর্থ জন হলো-রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা এলাকার একজন পশু চিকিৎসক। এই পশু চিকিৎসকের বর্তমান কর্মস্থল টেকনাফ উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে।

পঞ্চম জন হলো- উখিয়া উপজেলার-উখিয়া উপজেলা হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী। সে মারমা সম্প্রদায়ের লোক। হাসপাতালের পূর্ব পার্শ্বে সে বসবাস করে। তার স্থায়ী বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলায়।

ষষ্ঠজন হলো, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ৫০ বছর বয়স্ক একজন মহিলা। তার পিতা একজন শিক্ষক।

সপ্তমজন হলো-পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া সদরের বলীরপাড়ায় ৩০ বছর বয়সী এক যুবক। সে সাতকানিয়া থাকে পেকুয়ায় এসেছিলেন। অষ্টমজন হলো-পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের এক মহিলা সদস্য। তার বয়স আনুমানিক ৪২ বছর।

এ ৮ জন করোনা রোগীকে রামু’র ডেডিকেটেড আইসোলেশন কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ৮জন সহ রামু’র ডেডিকেটেড আইসোলেশন কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা হলো মোট ২৬ জন।

রামু’র ডেডিকেটেড আইসোলেশন কোভিড হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ডা. আলী এহেসান এতথ্য সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে, ৩০ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলায় করোনা ভাইরাস জীবাণু সনাক্ত হওয়া ৪ জনই নিজ নিজ বাড়িতে সেল্ফ আইসোলেশনে থেকেছেন। কেউ সরকারি আইসোলেশন হাসপাতালে যাননি।

বিষয়টি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহবাজ সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন। তাদেরকে করোনা রোগী চিকিৎসার জাতীয় গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে চকরিয়া উপজেলা করোনা ভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ শাহবাজ জানিয়েছেন।

চকরিয়া উপজেলার এই ৪ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী হলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন নার্স, একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসের দীঘি এলাকার একজন পুরুষ। পুরুষটি গত ২৯ এপ্রিল করোনা ভাইরাস সনাক্ত রোগীর সাথে একই মসজিদে নামাজ পড়ছিলো বলে জানা গেছে।
এছাড়া এর আগে চকরিয়া উপজেলায় করোনা ভাইরাস জীবাণু সনাক্ত হওয়া আরো ৩ জন রোগীও সেল্ফ আইসোলেশনে রয়েছেন।

৩০ এপ্রিল করোনা ভাইরাস জীবাণু সনাক্ত হওয়া কক্সবাজার জেলার ১৩ জন রোগীর মধ্যে রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ারখোপ গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র স্ত্রী ছেনুআরা ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান। তার সন্তান জসিম উদ্দিন ভরসা কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত। মারা যাওয়া উক্ত মহিলা রোগী গত ২৮ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি ছিলেন। এই মহিলাই হলো, মৃত্যুবরণ করা কক্সবাজার জেলার প্রথম করোনা রোগী।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ফিল্ড ল্যাবে এসব করোনা রোগী সকলের শরীরের স্যাম্পল টেস্ট করে রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ পাওয়া যায়।