শাহেদ মিজান, সিবিএন:
মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগরে মুরাদ উদ্দিন (২৫) নামে এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগী কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। ওই ঘটনার ভিডিও ও  সংবাদ সিবিএন- এ প্রকাশ হলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয় পড়ে। এতে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। ঘটনার বিস্তারিত অবহিত হয়েছে ২৮ এপ্রিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের নির্যাতিত যুবকের স্বজনদের ডেকে নিয়েই মামলা রুজু করেন।

থানার থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, মামলা রশিদ নগর ধলিরছড়া মুরাপাড়া এলাকার আলী হোসেনের পুত্র সাইফুল ইসলাম প্রধান আসামী করা হয়। এছাড়াও তার স্ত্রী শাহিনুর, ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ ফারুক আহমদ, প্রধান আসামী আলী হোসেনের পুত্র রমজান এবং ৩নং ওয়ার্ড ধলিরছড়া এলাকার নবী হোসেনের স্ত্রী হাসিনা এবং মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র শাহ আলম। এছাড়াও আরো ৫/৬জনে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও গণমাধ্যমে দেখে নির্যাতিত মুরাদের পরিবারের লোকজনকে ডাকাই। পরে তাদের চাওয়া মতে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। চুরি করলে আইন আছে। আইন কেউ হাতে তুলে নিতে পারে না। আইনের চরম পরিপন্থি হওয়ায় নির্যাতনকারী দুই নারীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

ঘটনা বিরবণে জানা যায়, মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগরে মুরাদ উদ্দিন (২৫) নামে এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগী কায়দায় নির্যাতন চালায় একদল নারী। নির্যাতনে ওই নারীদের সহায়তা করেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমদ ও নারীদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। গত ২৫ এপ্রিল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ধলিরছড়া মুরাপাড়া এই ঘটনা ঘটে। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে দফায় দফায় পেটানো হয়েছে। পরে মোবাইল চুরির অভিযোগ দিয়ে তাকে পুলিশের সোপর্দ করা হয়েছে। তার পরিবারের লোকজন এই অভিযোগ করেছেন।

এদিকে মুরাদ উদ্দীনকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে বেঁধে কিল, ঘুষি, লাথি, হাতুড়ি, লাঠিসহ বিভিন্ন বস্তু দিয়ে তাকে সর্ব অঙ্গে বেধড়ক পেটাতে থাকে। সবাই পিটালেও তিনজন নারীকে বেশি পেটাতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় মেম্বার ফারুক আহমদ। তিনি আসার পরও পেটানো হয়। ভিডিওর এক পর্যায়ে দেখা যায়, যুবক মুরাদ উদ্দীনকে মুখে মুখোশ পরিয়ে দিয়ে পেটানো হচ্ছে। মোবাইল চুরির স্বীকার না করায় সারা দিন এভাবে বর্বর কায়দায় পেটানো হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এক পর্যায়ে নির্যাতন সইতে না পেরে মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করতে তাকে বাধ্য হয়।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান জোরদার করা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে।