আবুল কাসেম আশরাফ

অস্বাভাবিক এক প্রাণঘাতী মহামারীতে গোটা পৃথিবী কাতর। নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মানবজাতি আজ তটস্থ।বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ এক অচলায়তনে। অর্থনীতি লাইফসাপোর্টে। মানুষ মরছে, আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যু ভয়ে কাঁপছে। কোটি কোটি মানুষ জীবন – জীবিকার তাড়নায় ধুঁকছে।পরিস্থিতির নাযুকতা আমরা এখনো পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারিনি। চলাফেরায় দেখা যায় বেপরোয়া ভাব। নিজের অজান্তেই নিজের ক্ষতি ডেকে আনি, কখনো বা অন্যের ক্ষতির কারণ হয়ে থাকি।

অথচ জীবন হলো আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত বিশেষ নিয়ামত এবং আমানত।এ আমানত রক্ষা করা আমাদের অপরিহার্য দায়িত্ব। জীবন নিয়ে অবহেলা ইসলাম দ্বারা স্বীকৃত নয়।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চিত জেনো, আল্লাহ তোমাদের পরম দয়ালু “।সুরা নিসা ২৯

রাসুলুল্লাহ (সঃ)সুস্পষ্ট বলেছেন,”তোমাদের অসুস্থরা যেন সুস্থদের কাছে না আসে”।উক্ত হাদীসে সম্পূর্ণ রুপে আইসোলেশনের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং কোয়ারেন্টাইন কিংবা আইসোলেশন বা লকডাউনের ধারণা আধুনিক বিজ্ঞান নয় ;বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশিত বিষয়টি প্রমাণিত হলো।

বিশেষত বাংলাদেশের জনসাধারণ অনেকটা অসচেতন। তাই আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েই চলছে। রাষ্ট্র পক্ষ থেকে শুরু করে সকল সচেতন মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, গ্রামে -গঞ্জে এখনো মানুষেরা ব্যাপারটা আমলে নিচ্ছে না। রীতিমতো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ডিগবাজি খাচ্ছে।একটুও থামছেন না দোকান -পাট, হাট -বাজারে যত্রতত্র ঘুরাঘুরি ও আড্ডাবাজি।দেখা যাচ্ছে, মাটে, ঘাটে উঠতি তরুণদের খেল -তামাশা।

আফসোস! কে শুনে, কার কথা।
এ ক্ষেত্রে সমাজের আস্থা ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি হিসেবে আলেম, উলামা, ইমাম, মুয়াজ্জিনের ভুমিকা অনেকটা ফলপ্রসূ মনে হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামে।

সময় এসে কড়া নাড়ছে অনেক আগ থেকে। বিশেষ করে এ মুহুর্তে করোনায় মানুষ দিশাহারা। প্রতিটি অঙ্গনে আলেম সমাজের আরও দায়িত্বশীল ভুমিকা বেশি জরুরী।

করোনায় মৃতদের জানাজা পড়িয়ে, অন্নহীনদের খাদ্য ব্যবস্থাপনায় আলেমগণ যেভাবে ভূয়শী প্রশংসিত হয়েছেন,সেভাবে আরো কিছু ধাপ অগ্রসর হয়ে গণসচেতনতা সৃ‌ষ্টিতে এগিয়ে আসা এখন সময়ের দাবী।