মুহিববুল্লাহ মুহিব, সিবিএন

আগে পুলিশ দেখলেই ভয়ে পালিয়ে যেতো পথ শিশুরা। এখন পুলিশের অপেক্ষায় বসে থাকে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে। কখন আসবে পুলিশ, কখন খাবার পাবে, সে আশায় তাদের অপেক্ষা। প্রতিদিনই পথ শিশু, ভারসাম্যহীন বা হতদরিদ্র মানুষগুলোর মাঝে খাবার বিতরণ করে যাচ্ছে পুলিশ। ঝড়-বৃষ্টিতেও খাবার সরবারহ অব্যাহত রাখবে এমনটাই দাবি পুলিশ কর্মকর্তাদের।

এরকমই একজন ক্লান্ত পথশিশু রায়হান। দু মুঠো খাবারের জন্য দিনভর ঘুরেও কিছুই জোটেনি তার ভাগ্যে। এখন অপেক্ষা রাতের খাবারের। একই অবস্থা জোবাইর ও হামিদ উল্লাহরও। দিনে কিছু না খেলেও রাতের খাবার মিলবে একটু পর, এই খুশিই যেন তাদের চোখে মুখে। আর সেজন্যই তাদের অপেক্ষা পুলিশ শহরের হলিডে মোড়ে।

কিছু সময়ের মধ্যেই হাজির হয় পুলিশের খাবারের গাড়ী। শহরের সব পথ শিশু এবং নি:স্ব মানুষের হাতে হাতে পৌছে যায় রাতের খাবার। সেদিনের মতো পেটের ক্ষুধা মেটে পথশিশুদের।

এসব কথায় এ প্রতিবেদককে বলছিলেন পথ শিশু হামিদ উল্লাহ। সে বলে, আগে দোকানপাট খোলা ছিল, তাই সবকিছু খেতে পারতাম। এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেউ খাবার দেয় না। রাতে পুলিশের খাবার খেয়ে পুরোদিন পার করি।

একই অবস্থা মো. জোবাইরের। সেও বলছে, আগের দিনগুলো আমাদের জন্য অনেক ভাল ছিল। কিন্তু এখন কেউ তাদের খাবার দিতে চাই না। শুধু পুলিশই তাদের খাবার দিচ্ছে। যা পেয়ে তারা অনেক খুশি।

এদিকে পুলিশ বলছে, গত ২৮ দিনে ১ হাজার ২৮০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা, ৫ হাজার ৮৮০ জনকে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে পুলিশ।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. খায়েরুজ্জামান সিবিএনকে বলেন, ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক না কেন আমরা খাবার সরবারহ অব্যাহত রেখেছি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তারা এখন আমাদের অপেক্ষায় থাকে। প্রতিদিনই ২০০-২৫০ জনের মাঝে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

খাবার পাওয়ার পর সবার হাসি মুখ পুলিশকে আন্দোলিত করে বলে জানালেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসেন।

তিনি সিবিএনকে বলেন, করোনা সংকটের মধ্যে সাধারন মানুষের পাশে দাড়িয়েছে পুলিশ। পথশশিু বা যারা ভারসাম্যহীন এবং একান্তই ফুটপাতে থাকে তারা পুলিশের গাড়ী দেখলেই মনে এখন থেকে খাবার সরবরাহ করা হবে। তাই পুলিশ এসব মানুষকে রান্না করা খাবার সরবরাহ অব্যাহত রাখবে।