শাহেদ মিজান, সিবিএন:

কক্সবাজার শহরের প্রথম করোনা আক্রান্ত আবুল কালামের পরিবারের নয় সদস্যের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। শনিবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ থেকে তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এই নয়জনের মধ্যে রয়েছেন আবুল কালামের মা, স্ত্রী ও চার মেয়ে এবং তার ভাই ওসমাণ গণি, তার দুই পুত্র। পুতুর স্ত্রী বাপের রয়েছেন।

আবুল কালামের পরিবারের নয় সদস্যের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মামাতো ভাই সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান।

তিনি জানান, আবুল কালাম আক্রান্ত হওয়ায় তার ও একই ঘরে বাস করা তার ভাইয়ের পরিবারের সদস্য নয়জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনিবার প্রকাশিত রিপোর্টে সবার নেগেটিভ আসে। এই জন্য আত্মীয়-স্বজনেরা মহান আল্লাহার শুকরিয়া আদায় জ্ঞাপন করেছেন। একই সাথে আবুল কালামের করোনা মুক্তির জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন।

সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান বলেন, আবুল কালাম গরীব হলেও মোটামুটি শিক্ষিত। তাই তিনি সচেতন ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ থাকতেই তার জ¦র হলে সে সতর্ক হয়ে যায়। কক্সবাজার এসেই সে আগে বাড়িতে যায়নি। সরাসরি সদর হাসপাতালে চলে যান রাত ২টায় এবং নমুনা সংগ্রহের অনুরোধ জানান। তবে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকেরা সেদিন নমুনা নেয়নি। তারপরও তিনি সচেতন ছিলেন, রাতে বাড়িতে ফিরে কাউকে সংস্পর্শে আসতে দেয়নি। এমনকি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে নিজে এক রুমে আবদ্ধ হয়ে থাকেন। পরেদিন আবার নিজে গিয়েই নমুনা দিয়ে এসেছেন। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যন্তও আবুল কালাম একই নিয়মে পরিবারের সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে রুমেই আবদ্ধ ছিলেন।

সচেতন ও সতর্ক পরিবারের সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে কোয়ারাইন্টাইন মেনে চলায় নিজে আক্রান্ত হলেও পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের মধ্যে করোনা সংক্রমণ হয়নি- এমনটি মনে করেন তার মামাতো ভাই সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান।
এদিকে আবুল কালামের এক মেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত এনজিও ওয়ার্ল্ড ভিশনে চাকরি করতেন। পিতার আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি উখিয়ায় অফিস করেছেন। পিতার রিপোর্ট পজেটিভ আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে শুধু ওয়ার্ল্ড ভিশন নয়; পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আতঙ্ক তৈরি হয়। এতে বন্ধ ঘোষণা করা হয় ওয়ার্ল্ড ভিশন অফিস এবং ওই মেয়ের)সংস্পর্শে আসা সকল কর্মীকে ছুটিতে পাঠান ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্তৃপক্ষ।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলী আহসান বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারাইন্টাইনে রাখা হয়েছে। একই সাথে তাদের বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। সদস্যদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও সবাইকে কোয়ারাইন্টাইন সম্পন্ন করতে হবে।