মুহিববুল্লাহ মুহিব  :

বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসে  দেশ এক প্রকার লকডাউনে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ নানা মাদক পাচারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চক্র। কেউ এম্বুলেন্স আবার কেউ পণ্যবাহী ট্রাকে করে এসব মাদক পাচার করছে। ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে এর কয়েকটি চালানও ধরা পড়েছে।

আইন শৃংখলাবাহিনী সূত্রে জানাযায়, চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত র‌্যাব,পুলিশ ও বিজিবির অভিযানে দুই লাখ ৫৩ হাজার ৫৫০ পিস ইয়াবা, ৩০ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়। বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে একজন।

তার মধ্যে, ৬ এপ্রিল লিংক রোড থেকে এম্বুলেন্সে করে পাচারের সময় ২০ হাজার ইয়াবাসহ তিনজনকে আটক করে ডিবি, ৭ এপ্রিল নাইক্ষ্যংছড়ি রাস্তার মাথা এলাকা থেকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ একজন যুবককে আটক করে ডিবি, ৮ এপ্রিল শহরের নুনিয়াছড়া এলাকা থেকে ৩০ বোতল ফেন্সিডিলসহ তিনজনকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), ১৭ এপ্রিল ৪ হাজার ইয়াবাসহ একজনকে আটক করে উখিয়া থানা পুলিশ, ১৯ এপ্রিল লিংকরোড থেকে ৩৯৬০ ইয়াবাসহ দুইজনকে আটক করে র‌্যাব, ১৭ এপ্রিল ৬০০ ইয়াবাসহ কলাতলী থেকে দুই বন্ধুকে আটক করে পুলিশ, ১৭ এপ্রিল টেকনাফের শাপলাচত্বর এলাকা থেকে ৪ হাজার ইয়াবাসহ এক যুবককে আটক করে র‌্যাব। এছাড়াও ১৯ এপ্রিল টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর এলাকায় বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় জাফর আলম নামে এক মাদক ব্যবসায়ী। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুই লাখ ইয়াবাসহ অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়।

দেশের চলমান সংকটকে সুযোগ নিয়ে মাদক পাচারকারী সক্রিয় হয়ে উঠেছে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল পাল্টে। যা ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন মহলকে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম সিবিএনকে বলেন, মাদকের বড় বড় রাঘব-বোয়ালরা এখনো সক্রিয় এটি তার প্রমাণ। অনেকে কারাগারে বসেও ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সম্প্রতি কারাগারেও ইয়াবা লেনদেন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এটি তার প্রমাণ। দ্রুত এসব রাঘব বোয়ালদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

তবে, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, মাদক পাচার রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারণে এসব চালান আটক হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসেন সিবিএনকে বলেন, করোনার এ মুহুর্তেও ইয়াবা পাচার আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। মানুষ কতটা নিচে নামলে এ সময় অপরাধগুলো করে। আমরা সম্মিলিতভাবে এটাকে প্রতিরোধ করছি এবং করে যাবো।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী সিবিএনকে বলেন, নতুন নতুন কৌশলে মাদক পাচারকারীরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের অভিযানে কয়েকজন আটকও হয়েছেন। তবে যেখানে মানুষ প্রাণ বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করছে সেখানে মাদক পাচারকারীরা ব্যস্ত তাদের কার্যক্রম নিয়ে। র‌্যাব আরও চেকপোস্ট বৃদ্ধি করে এ অভিযান অব্যাহত রাখবে।

উল্লেখ্য যে, গত ২৪ দিনে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৭৪৪ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনা টেষ্ট হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। করোনা পজিটিভ পাওয়াদের মধ্যে কক্সবাজার জেলার ১৪ জন ও পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির একজন।এরা প্রত্যেকেই জেলার বাইরে থেকে এসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশ এসেছেন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে।