আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিজ্ঞানীদের পর এবার জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান ফাইজারের তৈরি করোনার একটি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে। জার্মানির সরকারের অনুমোদন পাওয়ায় শিগগিরই করোনার এই ভ্যাকসিনটি মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বলছে, ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী সুস্থ ২০০ জনের দেহে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা চালানো হবে। বুধবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনস স্প্যান বলেছেন, এটি একটি ভালো লক্ষণ যে, জার্মানিতে একটি ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা এগিয়ে চলছে। আমরা ভ্যাকসিনটির প্রথম পরীক্ষা চালাতে পারি।

দ্বিতীয় ধাপে যারা এই রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকবেন তাদের শরীরে ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ করা হবে। বায়োএনটেক বলছে, ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট ফাইজারের সঙ্গে যৌথভাবে করোনার এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। ভ্যাকসিনটির নাম দেয়া হয়েছে বিএনটি১৬২। যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমতি পেলে সেখানেও এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালানো হবে বলে জানিয়েছে ফাইজার।

জেনস স্প্যান বলেছেন, একই সময়ে একটি পরামর্শ এখানে গুরুত্বপূর্ণ যে, ভ্যাকসিনটি পুরোপুরি মানবদেহে প্রয়োগের জন্য কয়েক মাস সময়ের দরকার হবে। এ ধরনের ভ্যাকসিনের জন্য নিরাপত্তাই সবার আগে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি করোনা ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে চূড়ান্তভাবে করোনার একটি ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য কমপক্ষে এক বছর থেকে দড় বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের একদল গবেষক সিএইচএডিওএক্স১ এনকোভ-১৯ নামের একটি করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন। যা বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে । করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের তৈরি এটিই প্রথম ভ্যাকসিন।

করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে এই মুহূর্তে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি গবেষক দল কাজ করছেন। এর মধ্যে কয়েকটি ইতোমধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও চালিয়েছে। গত মাসে প্রথমবারের মতো মানবদেহে করোনার ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালান যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের বিজ্ঞানীরা। চীনেও একটি ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে উৎপত্তি হওয়া নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৩৮ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ লাখ ৮৫ হাজার ১৯৩ জন। তবে চিকিৎসা শেষে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭ লাখ ৫ হাজার ৬৫৯ জন।