মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল টেকনাফের প্রথম করোনা রোগী নিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে রামু ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ আইসোলেশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। শত চেষ্টা করেও টেকনাফের বাহারছরার মারিশবনিয়ার সেই করোনা রোগীকে রামু ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ এর জন্য প্রস্তুত আইসোলেশন হাসপাতালে ভর্তি করানো সম্ভব হয় নাই। বিবৃতিতে ডা. টিটু চন্দ্র শীল বলেন, অধ্যবধি একজন রোগীও ঐ ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। ফলে নিরূপায় হয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টেকনাফ এ ভর্তি করিয়েছি। সল্প সংখ্যক ডাক্তার দিয়ে পরিচালিত উক্ত হাসপাতালে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে ডাক্তারবৃন্দ রোগীর যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিয়ে সংশয়ে আছেন। সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করে তিনি বলেন, “আমি একা যে যুদ্ধে যাত্রা শুরু করেছি, সেই মরণ যুদ্ধে যাতে রোগীসহ আমরা সকলেই জয়ী হতে পারি।” তিনি আরো বলেন, সোমবার ২০ এপ্রিল থেকে বিদেশ ও বিভিন্ন জেলা থেকে টেকনাফে সদ্য আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চিরনি অভিযান চালিয়ে তাদের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে টেস্টে পাঠানো হবে।

১৯ এপ্রিল রাতে দেওয়া ডা. টিটু চন্দ্র শীল এর বিবৃতি হুবহু তুলে ধরা হলো :

“আজ ১৯.০৪.২০১৯ ইং রোজ রবিবার টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ অধিনে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হলো। বর্তমানে রোগীকে আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টেকনাফ এ আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে।
রোগীর নামঃ
মোঃ হোসাইন, বয়সঃ ৫৫ বছর।
পিতাঃ মৃত মোঃ আব্বাস আলী।
ঠিকানা :
মারিশবুনিয়া, বাহারছড়া, টেকনাফ।
ইতিহাস :
বিগত ১৩ দিন পূর্বেই অর্থাৎ ০৬.০৪.২০২০ ইং নারায়ণগঞ্জ , ঢাকা থেকে কাঁচা আম বিক্রি করে নিজ বাসভবন, বাহারছড়ায় আসেন। তাঁর কিছু দিন পূর্বেই তিনি ঢাকায় যান। ঢাকা থেকে আসার পর থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে যান। আসার সময় তাঁর সঙ্গী ছিল আরো ০৪ জন। আসার পর তিনি অসুস্থতা বোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে নিজেই টেকনাফ সদরের একটি ঔষধের দোকান থেকে ঔষধ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। এই খবর জানা জানি হলেই আমাদের হট লাইন নাম্বারে ফোন করে এলাকার জনসাধারণ অভিহিত করেন। গতকাল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্ররণ করা হলে আজ বিকাল ২.৩০টায় তাঁর রির্পোট পজিটিভ পাওয়া যায়। এই কয়দিন ওনি যেখানে যেখানে বিচরণ করেছেন সেই সব বাড়ি(৪০টা), দোকান(২৫টা) লগ ডাউন (এবং ১.৫ কি.মি রাস্তা ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে) করে সবাইকে হোম কোয়ারান্টাইন এ রাখা হয়। আগামীকাল চিরনি অভিযান চালিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। শত চেষ্টা করেও ঐ রোগীকে রামু ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ এর জন্য আইসোলেশন হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয় নাই।( বিঃদ্রঃ অধ্যবধি একজন রোগীও ঐ ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নাই)।
যাক আল্লাহ ভরসা। আমরা নিজেরাই কর্তপক্ষের নির্দেশ ক্রমে আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টেকনাফ এ ভর্তি করিয়েছি। সল্প সংখ্যক ডাক্তার দিয়ে পরিচালিত উক্ত হাসপাতালে ডাক্তার বৃন্দ সংশয়ে আছেন। সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি আমি একা যে যুদ্ধে যাত্রা শুরু করেছি, সেই মরণ যুদ্ধে যাতে রোগীসহ আমরা সকলেই জয়ী হতে পারি।
আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন এবং ক্ষমা করে দিবেন। অযথা হাসপাতালে ভীড় কিংবা উক্ত আক্রান্ত রোগীকে নাজাহাল না করার জন্য সকল মিডিয়া সাংবাদিক বৃন্দকে বিনীত অনুরোধ করছি।
অনুরোধক্রমে :
ডাঃ টিটু চন্দ্র শীল
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টেকনাফ।”