মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস জনিত পরিস্থিতির শিকার হয়ে কক্সবাজারে সহ সারাদেশের মানুষ চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজারের শতকরা প্রায় ৭০% মানুষ এখন খাদ্য সংকটে ভুগছেন। খাদ্য সংকটে পড়া ত্রাণ বা নগদ অর্থ পেতে অথবা বিকল্প পথে রুজি রোজগার করতে গিয়ে বাড়ি ঘর থেকে মানুষ নিরূপায় হয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে কক্সবাজারে ঘোষিত লকডাউন (Lockdown) পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছেনা। যা যেকোন সময় ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে। এখন সরকার খাদ্য সহায়তার নামে যে সামান্য ৫/৬ কেজি চাল ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী নাগরিকদের দিচ্ছে, সেটা দিয়ে কোনরকমে ২/৩ দিনের বেশী সংসার চলেনা। তাই পরিকল্পিতভাবে প্রতিটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুপাতে কমপক্ষে একমাস সংসার চালানোর মতো খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরকারিভাবে সরবরাহ দিতে হবে। তাহলেই ঘোষিত লকডাউন (Lockdown) কক্সবাজারে শতভাগ সফল হতে পারে।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল গণমাধ্যমের মারফত সরকারের প্রতি এ দাবি জানান।

শনিবার ১৮ এপ্রিল সিবিএন-কে তিনি বলেন, নাগরিকদের সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া সেটা নাগরিকদের প্রতি রাষ্ট্রের কোন দয়া নয়। প্রত্যেক নাগরিকের সেটা মৌলিক, জন্মগত, সাংবিধানিক ও আদেশগত অধিকার। সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, যখনই সরকার বলেছেন, ‘STAY HOME’ অর্থাৎ ‘ঘরে থাকুন’ সাথে সাথেই প্রত্যেক নাগরিকের জন্য খাদ্য ও ন্যুনতম চিকিৎসা সুবিধা রাষ্ট্রকে সুনিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্র তা না করে ঘরবন্দী মানুষের জন্য ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তার নামে যা করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। আবার শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ সেই সহায়তাও পাচ্ছেনা। আর এ সংকট আরো কতদিনে, কত সাপ্তাহে, কত মাসে কাটে সেটা সম্পূর্ণ এখনো অনিশ্চিত। বরং দিন দিন সংকট আরো বাড়ছে। যারা দিনের উপার্জন দিয়ে সংসার চালাতেন, তারা ভিখারী নয়। তারা কারো কাছে হাতপাতার মানুষ নয়। করোনা ভাইরাস জনিত সংকটের আকস্মিকতায় তারা পরিস্থিতির শিকার। তাই নিন্ম আয়ের মানুষ, অসহায়, হতদরিদ্র, দিনমজুর, শ্রমিক, নিন্মবিত্ত, নিন্ম মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, রিকসাচালক সর্বশ্রেণী ও পেশার মানুষকে কমপক্ষে পূর্ণ একমাসের খাদ্য ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী সহায়তা দেওয়ার জন্য সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল সরকারের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকার সমাজের কর্ণধার, ভোটার তালিকা, জন্মনিবন্ধন কার্ড, এনআইডি ইত্যাদি সহায়তায় দ্রুত ও প্রকৃত পরিবার ও পরিবারের সদস্য সংখ্যার তালিকা তৈরী করা যেতে পারে। সে তালিকা ধরেই ন্যুনপক্ষে একমাসের খাদ্য সহায়তা দিলেই লকডাউন (Lockdown) ও STAY HOME কার্যকর হবে। তখন করোনা ভাইরাস সংক্রামণের আশংকা কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সবাইকে করোনা ভাইরাস এর ভয়াল গ্রাস থেকে নিরাপদ রাখতে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা মাঠে কাজ করছে। কিন্তু গণমাধ্যমের বদৌলতে দেখা যাচ্ছে, সেবাদানকারী এসব মাঠকর্মীরা সুরক্ষিত নেই। যা খুবই উদ্বেগজনক। করোনা যুদ্ধে মাঠে সেবা প্রদানকারী সাহসী সন্তানদেরও সরকারিভাবে মানসম্মত সুরক্ষা দিতে হবে। দিন দিন সার্বিক করোনা ভাইরাস সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় মাঠে সেবা প্রদানকারীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে উদ্যোগ না নিলে করোনা সংকট ব্যবস্থাপনা আরো বিপর্যস্ত হতে পারে। তাই সময়ক্ষেপণ নাকরে মাঠে সেবা প্রদানকারীদের সুরক্ষায় দ্রুত স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্মত সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা করতে সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।