ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা মূল্যের চাল বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগে চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ডিলার ‘ভাই ভাই ট্রেডার্সের’ স্বত্বাধিকারী আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম সেলিমের ডিলারশিপ স্থগিত করা হয়েছে।
সুনির্দিষ্ট ১২ জন অভিযোগকারীর অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তাকে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
বিদ্যমান তালিকায় ২৬৫ কার্ডধারী সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন কিনা তা আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে যাচাইপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) উপজেলা খাদ্য বাস্তবায়ন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পূর্ণাঙ্গ তদন্তে ডিলার দোষি প্রমাণিত হলে প্রতি কেজি চালের অর্থনৈতিক মূল্য আদায়ের পাশাপাশি নীতিমালা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সেইসাথে অভিযোগকারীরা চাল না পাওয়ার বিষয়টি ইউনিয়ন খাদ্য বাস্তবায়ন কমিটি কেন উপজেলা কমিটিকে অবহিত করে নি তা ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
এক্ষেত্রে ইউনিয়ন কমিটির কোনরূপ দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা তা তদন্ত কমিটি নিরূপণ করবেন।
এটিও সিদ্ধান্ত হয়, গত ১৫ এপ্রিলের বিক্রয় শেষে অবশিষ্ট ১২টি কার্ডধারীর চাল পরবর্তী বিক্রয় দিবসে ট্যাগ অফিসার এবং খাদ্য বিভাগীয় প্রতিনিধির তত্ত্বাবধানে তালিকাভুক্ত কার্ডধারীর নিকট বিক্রয় করা হবে। বিক্রিত চালের মূল্য প্রাপ্তিস্বীকার সাপেক্ষে ডিলারকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
সিদ্ধান্তের অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ ১৪ জনের নিকট পাঠানো হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান।
এর আগে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে ডিলারের অনিয়মের অভিযোগের সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।
তাৎক্ষণিক ইউনিয়নের বিক্রয় কেন্দ্রের ট্যাগ অফিসার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তাহেরকে উক্ত বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন উপজেলা খাদ্য বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান।
এই নির্দেশের পর সরেজমিন গিয়ে ২৬৫ জন উপকারভোগীর মধ্য থেকে ১২ জনের মৌখিক জবানবন্দী ভিডিও আকারে রেকর্ড করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
তদন্তকালে ডিলার রেজাউল করিম সেলিমের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ করেছেন কার্ডধারীরা।
১২ জন ভুক্তভোগির মধ্যে ১৫ মাস পর্যন্ত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পায় নি, এমনও রয়েছে বলে প্রতিবেদন দেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তাহের।