ইমাম খাইর, সিবিএন:
করোনার কারণে কক্সবাজার জেলা লকডাউন। দোকানপাট বন্ধ। অকারণে কাউকে পথে-ঘাটে পেলে পেটাচ্ছে সেনাবাহিনী, পুলিশ।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। পেটে ক্ষুধা রেখে কর্ম ফেলে ঘরে ঢুকে গেছে মানুষ।
ঠিক এমন সময়ে খুলে দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সদরের ইসলামপুরের লবণ মিলগুলো। সচল হলো লবণ ওঠানামার ঘাটসমূহ।
চলছে ব্যবসা। ঘটছে শ্রমিক সমাবেশ। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসছে অসংখ্য লবণবাহি ট্রাক।
প্রতি ট্রাকে অন্তত তিনজন লোক থাকে।
ঢোকার পথে ট্রাকগুলোতে নেই কোন তল্লাশি। কক্সবাজারের বুক চিরে নারায়ণগঞ্জের ট্রাকগুলো সোজা চলে যাচ্ছে ইসলামপুরের জনপদে।
চালক, হেলপার, লবণ শ্রমিক হয়ে যাচ্ছে একাকার।
এমতাবস্থায় ইসলামপুরের প্রায় নাগরিক করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে আতঙ্কিত-শঙ্কিত।
গত দুইদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া বেশ লক্ষণীয়।
মন্তব্য করেছেন ইসলামপুরের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।

সামাজিক দূরত্ব না মেনে লবণ শ্রমিকদের কাজ। দৃশ্য-১৩ এপ্রিল।

ইসলামপুরের বাসিন্দা ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক (ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ) Dr-Shahjahan Nazir নিজের ফেসবুকওয়ালে লিখেছেন, ‘কক্সবাজারের কয়েকটি ঝুঁকিপুর্ন স্থান যেখানে বাইরের বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আসে বিনিময়ে লবন নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলার ড্রাইভার ভাইয়েরা। করোনার এই মহা প্রলয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ড্রাইভার ভাইয়েরা যে খাদ্য সামগ্রী আনা নেওয়া করছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাই বলে উক্ত স্থান সমূহের জনগণকে নিরাপত্তাহীন রাখা যাবে না। যেমন, ইসলামপুর, চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, রশিদ নগর।
এমতাবস্থায়, মিল মালিক, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ভোলানটিয়ারদের সমন্বয়ে একটি টাক্সফোর্স গঠন করা যেতে। তাদের মাধ্যমে উক্ত বহিরাগতদের একটি নিদ্রিস্ট জায়গায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে পারেন।
যেহেতু আমরা জানি আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ৬ ফূট দূরে করোনা ছড়ায় না, তাই স্থানীয় জনগণ থেকে ১২ ফুট দূরে হয় এরকম একটি প্রতিষ্ঠান ঠিক করা যেতে পারে।সেটা হতে পারে সরকারি সাইক্লোন সেল্টার, প্রাইমারী স্কুল, হাই স্কুল, মাদ্রাসা বা অন্য কোন সরকারি বিল্ডিং। যেখানে এসে ড্রাইভার বা হেল্পার বা কেউ বিশ্রাম নিতে পারেন। উক্ত বিশ্রাম আগারে তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্র সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বহন করবেন। সেখানে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত সদর উপজেলার বা সংশ্লিষ্ট উপজেলার করোনা রেপিড রেস্পন্স টিম কে অবহিত করবেন। তাতে প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিতে পারেন।
আল্লাহ আমার প্রিয় ইসলামপুর কে হেফাজত রাখুক।’

ইসলামপুরের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য Hadman Sokkor  লিখেছেন –

‘প্রিয় ইসলামপূরবাসী, লবণের ট্রাক বন্ধ করতে হলে আমাদেরই আন্দোলনে নামতে হবে। ইসলামপুর বাচাঁতে আওয়াজ দিন।’

আবদুল মন্নান লিখেন -‘লবণ…লবণ….লবণ।
এই লবণেই কি
ইসলামপুর শেষ????
লবণ গুলো লোড-আনলোড করতে লেভার/শ্রমিক গুলো কতদুর থেকে আসা যাওয়া করে?
তার উপর গাড়ি, ড্রাইভার, হেলপার এরা কত জেলার হতে পারে?
মর জাতি আর কতদিন হলে বিবেক জাগ্রত হবে???

Sarwar Alam লিখেছেন -‘ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য -এদের মত অবস্থা হলে মনে হয় ডি সি সাব ব্যবস্থা নেবেন।’

Sk Morad লিখেছেন -‘গুটি কয়েকজন লবন মিলারের কারণে পুরো কক্সবাজারবাসী হুমকির মুখে। কারণ, এখানে সবসময় বহিরাগত লোকের সমাগম হয়। তারা কাজ শেষে বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়। বিশেষ করে টাকার প্রয়োজনে এরা কক্সবাজার জেলার সমস্ত ব্যাংকগুলোতে ছুটে বেড়ায়। বিভিন্ন যাত্রীর সাথে যাতায়াত করে সবাইকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতেছে।
প্লিজ ভাই, আপনার মাধ্যমে ডিসি মহোদয়ের শুভ দৃষ্টি কামনা করছি। অনতিবিলম্বে লবন মিল বন্ধ করে দেওয়া হউক।’

রাজনীতিবিদ Homayun Kabir Himo লিখেছেন -‘ইসলামপুরে যে সমস্ত ট্রাক আসতেছে ঐ সমস্ত ট্রাক ড্রাইভার, হেলপার সবাইকে কক্সবাজারের প্রবেশপথ হারবাং এ প্রাথমিক চেক আপ করা আবশ্যক। গাড়ীগুলোকে প্রবেশপথে স্যানেটাইজড করা আবশ্যক। নইলে জেলার লকডাউন কোন কাজে আসবেনা। যেহেতু কক্সবাজার জেলা এখনো করোনামুক্ত। অতিসত্বর এসব প্রবেশপথে দয়া করে মনোযোগ দিন কক্সবাজারের প্রশাসন এ জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।’

সামাজিক সংগঠক Nazrul Islam লিখেন -‘এসব বন্ধ করা উচিত।
প্রয়োজনে সামাজিক বিদ্রোহ গড়ে তুলা জরুরি।’

বিশিষ্ট আলোচক Bashir Uddin লিখেন -‘আসলে খুবই দুঃখজনক। মিল মালিকদের আরও সচেতন হওয়া দরকার।’

Hossain Mahmud Kamal লিখেছেন -‘আল্লাহ না করুক। কেউ যদি সংক্রমিত হয়, তবে পুরো দায়ভার বহন করতে সকল মিল মালিকদের।’

ছাত্র নেতা ছৈয়দ মোহাম্মদ তামিম লিখেন -‘মিল মালিকদের কাছে মানুষের জীবনের চেয়ে টাকা বড়।’

শিক্ষক এস কে জাকের মন্তব্য করেন -‘মিল মালিকরা তো কথা কানেই নিচ্ছে না। সেই সাথে ট্রান্সপোর্ট মহল।উভয় ক্ষেত্রে মুনাফা বড়লোকদের।তাইতো এমন গরিবের রক্ত চুষার তান্ডব।’

যুবনেতা Saiful Islam Rana লিখেছেন -‘ Mohammad Ashraful Afsar স্যার প্লিজ আমাদের কক্সবাজার কে বাঁচান, আমাদের ইউনিয়নের জনগণকে বাঁচান।
আমি বিনীতভাবে হাতজোড় করে বলছি স্যার প্লিজ…’

শিক্ষক  Nazim Uddin  মন্তব্য করেন -‘ভাই, আমি ডি সি স্যারের ম্যাচেঞ্জারে লিখেছি, But no response. আপনারা যারা মিডিয়াযোদ্ধা আছেন তারা কিছু করেন। না হয় আচিরেই ইসলামপুর ২য় নারায়ণগঞ্জ হবে (করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে)।’

Nurul Karim লিখেন -‘আমরা এলাকাবাসী চাই, ইসলামপুরে লবণ মিল বন্ধ করা হউক।বিভিন্ন এলাকার মানুষ কাজের তাগিদে এখানে আসে আর বিভিন্ন জেলার গাড়ি লবণ নিতে আসায় আমরা বেশি ঝুকিতে পড়ে গেছি। ডিসি মহোদয়ের নিকট বিনিত অনুরোধ, ইসলামপুর তথা কক্সবাজারবাসী স্বার্থে লবণ মিল বন্ধ করা হউক। আর ইসলামপুরে প্রাশাসনিক নজর বাড়ানো হউক।’

MD Hanif লিখেন -‘আমরা এলাকাবাসী চায়, ইসলামপুরে লবণমিল বন্ধ করা হউক।বিভিন্ন এলাকার মানুষ কাজের তাগিদে এখানে আসে আর বিভিন্ন জেলার গাড়ি লবণ নিতে আসায় আমরা বেশি ঝুঁকিতে পড়ে গেছি। ডিসি মহোদয়ের নিকট বিনিত অনুরোধ, ইসলামপুর তথা যতগুলি লবণ ফ্যাক্টরি আছে কক্সবাজার জেলায় যেমন মহেশখালী-কুতুবদিয়া টেকনাফ-কক্সবাজার ইসলামপুর চকরিয়ায় খুটাখালী ভারুয়াখালী পোকখালী যেখানে হোক না কেন- কক্সবাজারবাসী স্বার্থে লবণ মিল বন্ধ করা হউক। আর ইসলামপুরে প্রাশাসনিক নজর বাড়ানো হউক।’

MD Anwar Hossn লিখেছেন – ‘ভাই কি বলব আর। ইসলামপুরে মানুষের জীবনের চেয়ে টাকার মূল্য অনেক বেশি। ওরা কি বলে -টাকা থাকলে পকেটে, শ্রমিক আসবে রকেটে।’

Mohammed Nezamul Hoque বলেন -‘নারায়ণগঞ্জের কোন ট্রাক যাতে কক্সবাজার সীমান্তে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।’

K M Ramjan Ali  মন্তব্য করেন -‘যেখানে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকা হতে সাধারণ মানুষ আসতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে পারেনা। সেখানে হাইওয়ে রোড় দিয়ে সূদুর নারায়নগঞ্জ হতে লক ডাউন সময়ে ট্রাক গুলি কক্সবাজার কেমনে আসে?
এখানে প্রশাসন কী দায়িত্ব এড়াতে পারবে?
প্রশ্ন রইল।’

ছাত্র নেতা Shahinul Kader Lemon  মন্তব্য করেন -‘নারায়ণগঞ্জের কোন ট্রাক যাতে কক্সবাজারে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।প্রয়োজনে প্রধান সড়কে জনগণের সাহায্যে বাঁধা দেয়া হউক।টাকা ইনকাম করার অনেক সময় আছে।’

Md Shafi Cox  লিখেন -‘ঢাকার গার্মেন্টস খুলে দিয়ে যে মাশুল ঢাকাবাসী দিচ্ছেন, এই লবন ট্রানজিটের কারনে হয়ত কক্সবাজারবাসীও ঐরকম মাশূল দিতে হতে পারে।’