শফিকুল ইসলাম নয়ন :

করোনা! এ যেন এক হৃদয় কম্পিত আতঙ্কের আরেকটি নাম। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী এবং চীনের ৭ম বৃহত্তম নগরী উহান নগরীতে একটি নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যাকে নোভেল করোনাভাইরাস (২০১৯-এনসিওভি) নামকরণ করে।
ক্রমেই ভাইরাসটি চীনের বাইরে আরো কয়েকটি দেশে ধরা পরে। যাহা বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের ২০৯ টি দেশে।
ইতিমধ্যে করুণা ভাইরাসে আক্রান্তে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮৮ হাজারেরও বেশি।

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক,
সর্বশেষ আপডেট: ০৯.০৪.২০২০ইং
৩’রা এপ্রিল- ৫ জন শনাক্ত,
৪ই এপ্রিল- ৯ জন শনাক্ত,
৫ই এপ্রিল-১৮ জন শনাক্ত,
৬ই এপ্রিল-৩৫ জন শনাক্ত,
৭ই এপ্রিল- ৪১ জন শনাক্ত,
৮ই এপ্রিল-৫৪ জন শনাক্ত,
৯ই এপ্রিল- ১১২ জন শনাক্ত।
মোট আক্রান্ত সংখ্যা ৩৩০ জন এবং মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২১ জন!

বুঝতেই পারছেন কি হতে যাচ্ছে সামনে!
ইতিমধ্যে প্রায় সর্বক্ষেত্রেই লকডাউন ঘোষণা। মসজিদে একসাথে ৫জনের অধিক নয় এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও একই নিয়মে প্রার্থনা করার ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে স্বল্প আকারে চালিত রয়েছে ব্যাংকের লেনদেন। ব্যাংকে লোক সমাগম হচ্ছে, সেটা পূনরায় ভেবে দেখবে সরকার। তবে আমাদের একটা ভাবার বিষয় আছে সেটা হচ্ছে টাকার স্পর্শ।
টাকা জিনিসটি হাতবদল হচ্ছে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষের হস্ত দ্বারা। কোনটা আক্রান্ত আর কোনটা সুস্থ তার মাঝে কোন পার্থক্য নেই টাকার মাঝে।

মনে করা হচ্ছে, ব্যাংকের জামানত ও উত্তোলনের দ্বারা ভাইরাসটি সংক্রামিত হতে পারে টাকার মাধ্যমে।
এমনকি বাংলাদেশের একদল গবেষক গত বছরের অগাস্ট মাসে বলেছিলেন, তারা বাংলাদেশি কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রায় এমন ধরণের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন, যা সাধারণত মলমূত্রের মধ্যে থাকে। তাছাড়া দুর্ভাগ্যক্রমে যদি কোন আক্রান্ত ব্যক্তির হাতে স্পর্শ হয়ে যায় তাহলে ভাইরাসটি সংক্রমিত হওয়া বিদ্যুৎ গতির সমান হবে।

যেহেতু এটা সরাসরি মানুষ হাত দিয়ে ধরে, অনেক সময় মুখের থুথু নিয়ে কাউন্ট করে। তাই এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেখান থেকে এটা হতে পারে যদি মানুষ সে হাতে খায়, মুখে দেয়।”

কেননা
প্রথমত, আমরা টাকার স্পর্শের ব্যাপারে অতটা সচেতন নই!
দ্বিতীয়ত, কোনটা সুস্থ ব্যক্তির হাতে স্পর্শিত বা কোনটা আক্রান্ত ব্যক্তির হাতে”সেটা যাচাই করা প্রায় অসম্ভব।
আমি মনে করি করোনা ভাইরাস মোকাবিলায়, কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির মধ্যে টাকার বিষয়টিও বিবেচ্য।

সুতরাং বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিবেন আর যথাযথ সর্তকতা অবলম্বন করে চলবেন।

সতর্কতাঃ
◾অবশ্যই টাকা গোনার সময় হাত দিয়ে মুখের লালা নেবেন না।

◾ব্যাংক নোট বা টাকা নাড়াচাড়ার পরপরই অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।

◾যারা অত্যধিক মুদ্রা নাড়াচাড়া করেন, যেমন ব্যাংক কর্মী বা মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা, তাদেরকে অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। তারা গ্লাভস পরে নিতে পারেন।

◾সতর্কতা হিসেবে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে পারেন।

◾টাকা ধরা বা ব্যবহারের পর পরই চোখ, নাক বা মুখে হাত দেয়া যাবে না।

সর্বশেষে অনুরোধ করবো,
ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন।
অতি প্রয়োজন ব্যতীত ঘরে থেকে বের হবেন না।
আপনার জন্য,
আপনার পরিবার জন্য,
এবং আপনার দেশের জন্য।

লেখক: শফিকুল ইসলাম নয়ন।
স্টাডি: ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইন্জিনিয়ারিং টেকনোলজি,কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। FB: Abir Si Noyan