মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় একই ওয়ার্ডে তিন জন করোনা আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে। বিষয়টি পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত গড়ালে স্থানীয় মেম্বারকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় ঘটেছে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা। একই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্য লোকজনের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এটি সমালোচক মহলের গুজব বলে মন্তব্য করেন তারা।
এর কিছুদিন আগে একই ইউনিয়নের চা-বাগান এলাকায় এক ইতালি প্রবাসী বাড়ি আসার গুজব নিয়ে তোলপাড় চলে। বিষয়টি তদন্ত করতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী লোকজন প্রবাসীর বাড়িতে গেলে তারা এরকম কোন অস্তিত্ব পাননি। পরে স্থানীয়রা ইতালি থেকে তার সাথে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলে বিষয়টি পুরোপুরি গুজব বলে নিশ্চিত হয়।
সর্বশেষ পূর্ব মাইজপাড়ার ঘটনাটি সরেজমিনে জানা গেছে, বিয়ের পর গর্ভবতী হয়ে বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসে মেয়ে। সেখানে সর্দিকাশির পাশাপাশি সামান্য বমিও হয়েছে। কুচক্রী মহল করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে বলে ওই মেয়ের নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এমনটাই দাবি ওই নারীর পিতা পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাছির উদ্দিনের। তিনি বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
এরপর যোগাযোগ করা হয় অপর ব্যক্তি একই এলাকার ছৈয়দ আহমদের পুত্র নুরুল ইসলাম (৩৩) এর সাথে। তার এবং তার পরিবারের দাবী, নুরুল ইসলাম একজন পাওয়ার টিলার (ট্রাক্টর) চালক। বেশ কিছুদিন ধরে সে গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়ে ঘরেই রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তার শরীরে জ্বর এবং ব্যথা অনুভব হয়। তবে ওইদিন সন্ধ্যা নাগাদ সে কোন জ্বরও অনুভব করেননি। তারপরও যদি করোনা’র সন্দেহ হয় তাহলে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে কোন আপত্তি নাই বলে জানিয়েছেন তার পিতা ছৈয়দ আহমদ।
এইদিন বিকেলে করোনা রোগীর বিষয়টি নিয়ে এ প্রতিবেদকের নিকট ফোন আসে ডুলাহাজারা (৭নং ওয়ার্ড) মগছড়াজুম এলাকার মোঃ আলাউদ্দীনের পুত্র মিরাজ উদ্দিনের। সে ফোনকলে জানায় পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় দু-তিনটে করোনা রোগী সংক্রান্ত খবর। ওই রোগীদের বসতবাড়ির পাশে নাকি তার (মিরাজের) ছোটনানী ও প্রবাসীর স্ত্রী মৃত জামাল উদ্দিনের কন্যা বিউটি আক্তারের বাড়ি। তারাই মিরাজ উদ্দিনকে ফোনে এ খবরটি জানিয়েছেন।
এদিকে এলাকায় করোনার খবরটি ছড়িয়ে পুরো এলাকাজুড়ে বিস্তার লাভ করলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়ায়। বিষয়টি পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত গড়ালে জরুরী ভিত্তিতে তদন্তের নির্দেশ দেয় স্থানীয় ইউপি মেম্বারকে।
ডুলাহাজারা ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার ফরিদুল আলম জানান, পরিষদ থেকে আমার এলাকায় করোনা রোগী থাকার কথা বলে বিষয়টি সরেজমিনে সত্যতা যাচাই করতে বলে। আমি ও গণ্যমান্য লোকজনদের সাথে নিয়ে সরাসরি বাড়ি বাড়ি গিয়ে যোগাযোগ করি। কথা বলে জানতে পারি এক মহিলা গর্ভবতী তার বমি হচ্ছে ও অপর এক যুবকের গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়ে ঘরে অবস্থান করছে। আগে জ্বর ও ব্যাথা থাকলেও এখন অনেকটা সেরে উঠেছে।
ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল আমিন জানান, পূর্ব মাইজ পাড়া এলাকায় কয়েক জনের করোনার লক্ষ্মণ দেখা দিয়েছে জানিয়ে আমার কাছে ফোন আসে। তাৎক্ষণিকভাবে সরেজমিনে যাচাই করতে ওই এলাকার মেম্বারকে অবহিত করি। আর যদি বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব বিষয় নিয়ে কেউ গুজব ছড়ায় তা খতিয়ে দেখাও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।