ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
কক্সবাজার জেলায় মোট ৫১৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ২৩ জনকে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছে ৪৫২ জন।
১ মার্চ থেকে কক্সবাজার জেলায় বিদেশ প্রত্যাগত ২০০২ জনের মধ্য থেকে ১১২১ প্রবাসীর ঠিকানা ও অবস্থান চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজার জেলায় কেউ মৃত্যুবরণ করে নি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ৭ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ একজন। যিনি ঢাকাস্থ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৫ এপ্রিল সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।
তিনি ছাড়া আর কোন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয় নি।
করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় কক্সবাজারের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ১৬২টি বেড এবং ২৯টি বেসরকারী হাসপাতালে ১০৬ টিসহ মোট ২৬৮ টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিয়োজিত রয়েছে ২৪৬ জন ডাক্তার ও ২৭৫ জন নার্স।

করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় কক্সবাজার জেলার প্রস্তুতিঃ
কক্সবাজার জেলার ৮টি সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র বা হাসপাতালে বেড রয়েছে ৫৪১ টি। তম্মধ্যে করোনা ভাইরাস (কেভিড-১৯) চিকিৎসায় ১৬২ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব চিকিৎসা কেন্দ্র মোট ১৩৯ ডাক্তার ও ১৯৫ জন নার্স দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালসমূহে মোট ১২৪৫ পিস ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) বিতরণ করা হয়েছে। ২৫৬১ পিস পিপিই মজুদ রয়েছে।
জেলায় ২৯ টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট বেড রয়েছে ৮৪২ টি। এখানে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১০৬ টি। বেসরকারি হাসপাতালসমূহে মোট ১০৭ জন ডাক্তার ও ৮০ জন নার্স কর্মরত রয়েছে। এখানে ১১৮৫ পিস পিপিই মজুদ আছে। যা থেকে ৩১৫ টি ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
কেভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির জরুরী চিকিৎসা, স্থানান্তরের জন্য ১১টি পৃথক এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চিকিৎসা কেন্দ্রসমূহে আইসোলেশন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকলেও রামু উপজেলায় নবনির্মিত হাসপাতালে একটি নতুন ভবনে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আইসোলেশন ইউনিট এবং চকরিয়া উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আরো একটি আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে।

জেলায় সরকারি সহায়তা পরিস্থিতিঃ
কেভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কর্মহীন, অতিদরিদ্র, দিনমজুর শ্রেণীর মানুষদের জরুরি প্রয়োজনে খাদ্য সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে কক্সবাজার জেলায় ৪২৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২০ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৪ হাজার পরিবারের নিকট ৪৯০ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা এবং ৬ হাজার ৬০০ পরিবারকে ১৪ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকার নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলায় করোনাভাইরাস (কেভিড-১৯) প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনাসহ সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের জনগণের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।
এদিকে, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মাহবুবুর রহমান সিবিএনকে জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে তাবলীগ জামায়াতে যোগ দিয়ে আসা টেকনাফের সাবরাংয়ের ১১ জনকে ৬ এপ্রিল রাত্রে ইনানী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনে নেয়া হয়েছে।
তাদের কারো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে। কোয়ারেন্টাইন শেষ হলে তারা বাড়ি ফিরে যাবে।
এছাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে সিইসি’র তত্বাবধানে কোয়ারান্টাইনে থাকা ৫ ভারতীয় নাগরিকের মধ্যে ২ জনের কোয়ারান্টাইন পিরিয়ড শেষ হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।