বাংলা ট্রিবিউন:
করোনাভাইরাসের প্রভাবে অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

সোমবার (৬ এপ্রিল) রাত আটটার দিকে গণ্যমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। জামায়াত সেক্রেটারি বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাত নয়টার মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমি নিজে বিবৃতি পড়ে দিয়েছি।’

বিবৃতিতে জামায়াত সেক্রেটারি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজকে ঋণের প্যাকেজ বলে মন্তব্য করেন। সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত ৭২,৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনার প্যাকেজটি একটি ঋণের প্যাকেজ। যেখানে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন শর্তে ঋণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্যাকেজে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা খাত এবং দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসী যারা করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত তাদের ব্যাপারে এবং দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।

বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ছোট-বড় সব প্রতিষ্ঠান ও খাতের সহায়তা প্রয়োজন। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাত হচ্ছে কৃষি। এর উপখাত হিসেবে রয়েছে ডেইরি, পোল্ট্রি ও ফিশারিজ। কৃষিখাতের সঙ্গে দেশের আড়াই থেকে তিন কোটি পরিবার সম্পৃক্ত। তারা একদিকে ন্যায্যমূল্যে কৃষি উপকরণ পায় না, অপরদিকে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকেও তারা বঞ্চিত। প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কোনও আর্থিক সুবিধার উল্লেখ নেই।

জামায়াত নেতা অভিযোগ করেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে লাখ লাখ প্রবাসী আজ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এ দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানো সরকারের দায়িত্ব। অথচ প্যাকেজে তাদের সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, দিন আনে দিন খায় এমন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের শ্রম দিয়ে দেশের জন্য কাজ করে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার প্যাকেজে কিছুই বলেননি।

গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা মনে করি আর্থিক প্রণোদনার এ অর্থ কোনোভাবেই ঋণখেলাপিদের দেওয়া যাবে না। সততা ও স্বচ্ছতার সাথে এবং স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ ও দুর্নীতির ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল বিকালে জামায়াতের জোটসঙ্গী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় সরকারের ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার মাধ্যমে জনমতকে কিছুটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। আমরা কিছুটা হলেও আশস্ত হলাম যে তারা জনমতকে কিছুটা গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, আসলে এটা পুরোটা দিয়েছে ঋণ। এখানে অনুদান বলতে কিছুই নেই।