কামাল হোসেন,রামু :
কক্সবাজারের রামুতে অনেক এলাকায় মানা হচ্ছেনা করোনা সতর্কতা। তাদের ধারনা এই পরিস্থিতি থেকে আল্লাহ তাদের রক্ষা করবেন। মৃত্যু লিখা থাকলে কোন সতর্কতাই কাজে আসবে না। এধরনের লোকগুলো নিয়ে চরম বিপাকে আছেন রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা।

জানা যায়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি আতংকে পরিনত হওয়ার সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে রামুতে মাইকে সতর্কতামূলক প্রচারনা শুরু করা হয়। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে সকল হাট-বাজার, বাস স্টেশন, জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাইকিং করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হয়। তাতেও মানুষ সচেতন না হলে ইউএনও তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রামুর সর্বসাধারনের উদ্দেশ্যে একটি হ্নদয় বিদারক স্টেটাস দেন এবং নিজের হাতে হ্যান্ড মাইক তুলে নিয়ে প্রতি এলাকায় এলাকায় মানুষকে ঘরে থাকার আহবান জানান। সড়ক ও দোকানপাটে জনসমাগম বন্ধে প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা সংক্রমন রোধ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনই তিনি নিজে গাড়ি চালিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন রামুর সমতল-পাহাড় অধ্যুষিত জনপদ। একদিনে তিনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের সবকটিতেই অভিযান চালিয়েছেন।

ফেসবুক স্টেটাসে তিনি লিখেন “প্রিয় রামুবাসী, আমরা আপনাদের জন্য বাসায় প্রিয়তমা স্ত্রী, আদরের ছোট্ট মেয়েকে রেখে বাইরে বের হই শুধু আপনাদেরকে বাসার ভিতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের জন্য কী আপনারা নিজ বাসায় থাকতে পারেন না? আমাদেরকে বুঝুন এবং বাসায় থাকুন। করোনা থেকে সতর্ক এবং নিরাপদ থাকুন।”

এর পরও দেখা যায় রামুর কিছু কিছু এলাকায় করোনার সতর্কতা মানা হচ্ছেনা। অবহেলা করা হচ্ছে বিষয়টি।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কাউয়ারখোপ,গর্জনিয়া,কচ্ছপিয়া,চাকমারকুল,রাজারকুল, খুনিয়াপালং,রশিদ নগর ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় করোনা সতর্কতা মানা হচ্ছেনা। মানুষগুলো বিষয়টিকে তেমন একটা আমলে নিচ্ছেনা। প্রতিটি হাট বাজারে লোকসমাগম লক্ষ্য করা গেছে।
সরজমিন পরিদর্শন কালে দেখা যায়, কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের করোনার সতর্কতা গুরুত্ব না দিয়ে অযথা পাড়া মহল্লায় জটলা কছেন। কোন কারন ছাড়াই কেউ কেউ ঘরের বাইরে যাচ্ছেন।আর হাট বাজারে লোকসমাগম তো আছেই। চায়ের দোখানে চলছে আড্ডা। এমনকি ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে একজন আরেকজনের সাথে যে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা উচিত সেটিরও তোয়াক্কা করছেনা এসব আড্ডাবাজ মানুষগুলো। খেলার মাঠেও স্বাভাবিক নিয়মে চলছে খেলাধুলা। গুটিকয়েক ছাড়া কারো মুখে মাস্ক দেখা যাইনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এক মাত্র সচেতনতাই মূল চিকিৎসা।
সাংবাদিক ও ছড়াকার সোয়েব সাঈদ জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমার মত সকল জনপ্রতিনিধি, সামাজিক সংগঠন ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তবর্গকে আড্ডা ও গণজমায়েত বন্ধে ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ একজন সরকারি কর্মকর্তাকে দাপ্তরিক নানা বিষয়ও সামাল দিতে হয়। করোনার প্রভাব বিস্তার লাভ করলে আমাদের ঠাঁই হব লাশের স্তুপে। তাই সবার বাড়িতে অবস্থান নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমরা এড়াতে পারিনা। যারা ভাবে এটা কেবল প্রশাসনের কাজ, তাদের ধারনা ভুল এবং অমানবিক বটে।