মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কক্সবাজার শহরে আপদকালীন সময়ে ১০ টি রেস্টুরেন্ট খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা গত ৩০ মার্চ নির্ধারিত ১০ টি রেস্টুরেন্টকে শর্ত সাপেক্ষে খোলা রাখার অনুমতি দেন। করোনা ভাইরাস বিধি অনুযায়ী অনুমতিপ্রাপ্ত রেস্টুরেন্ট গুলো দুরত্বে চেয়ার বসানো, পার্সেলকে উৎসাহিত করা, রেস্টুরেন্টের ভিতরে বাহিরে জমায়েত না করা, হোটেল বয়, বাবুর্চিদের মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদি ব্যবহার করা। হাত ধোয়ার জন্য সেনিটাইজার, টিস্যু সহ প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নাগরিকদের খাদ্য গ্রহনের সুবিধার্থে রেস্টুরেন্ট গুলো খোলা রাখার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে বলে অনুমতিপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

খোলা রাখার জন্য অনুমতি প্রাপ্ত হোটেল গুলো হলো-(১) বৈশাখী রেস্তোরাঁ (তৃতীয় শাখা) ও লাহাব কাবাব হাউজ, ডলফিন মোড়, কলাতলী। (২) বৈশাখী ঘরোয়া মেচ, সুগন্ধা মোড়, কলাতলী রোড। (৩) ঢাকা ভাতঘর, কটেজ জোন, কলাতলী। (৪) রোদেলা রেস্তোরাঁ, জিয়া গেস্ট ইন, কলাতলী রোড। (৫) চৌধুরী হোটেল, হলিডে মোড়, (৬) পালস রেস্তোরাঁ, প্রধান সড়ক। (৭) বিসমিল্লাহ হোটেল, লালদীঘির পাড়। (৩) ইনানী রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল সড়ক (৯) হিমছড়ি রেস্তোরাঁ এন্ড বিরিয়ানি হাউজ, বার্মিজ স্কুল রোড এবং (১০) জাহাঙ্গীর মেচ, হাসপাতাল সড়ক।

এদিকে, ১০ টি রেস্টুরেন্ট খোলা রাখার অনুমতি নিয়ে নাগরিকদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে ক্ষুব্ধ ও নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

তারমধ্যে জাবেদ ইকবাল তার ফেসবুক আইডি’তে লিখেছেন —
“এইটা কেমন সিদ্ধান্ত !
যেখানে আমরা সবাই চেস্টা করতেছি সবাইকে ঘরে রাখতে এবং নিজেরা ঘরে রাখতে । সরকার কঠোর নির্দেশনাও জারি করেছে সবাইকে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য। তাই সকল স্কুল কলেজ সরকারী বেসরকারি অফিসও বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে আর তা বাস্তবায়ন করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগির লক্ষে নামানো হয়েছে সেনা বাহিনী ।
তাহলে কেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন রেস্টুরেন্ট খোলা রেখে মানুষ ঘরের বাহিরে করে করোনা মোকাবিলার সব আয়োজন ভেস্তে দেয়ার উদ্দোগ নিল ! যেখানে জেলা প্রশাসক নিজে মানুষের ঘরে ঘরে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌছে দিচ্ছেন। একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমি।”

শেখ ভাইজান লিখেছেন–
“এটা কেমন সিদ্ধান্ত?
যেখানে সারাদেশে হোটেল রেস্তোরাঁসহ যেকোনো জনসমাগম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সেখানে কক্সবাজারে বিদেশীর দোহায় দিয়ে কেনো রেস্তোরাঁ খোলা রাখার নির্দেশ দিলো প্রশাসন? এতে কি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশংকা বাড়বেনা?
অতচ কক্সবাজার শহরে বহু হোটেল, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাঁধা পড়ে তাদের গ্রামে যেতে পারেননি। তারাও মানুষ। কিন্তু এ বিপদে আলাদা করে বিদেশিদের কথা চিন্তা করে রেস্তোরাঁ মালিক এবং কর্মচারীদের করোনা ঝুঁকিতে ফেলার মানে বুঝলামনা।”

আজিজুল হক সোহেল লিখেছেন —
“মাননীয় জেলা প্রশাসক,
এই সিদ্ধান্ত মানে আপনাদের এত দিনে নির্ভূল কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করা!যেখানে এই হুজুগী বাংঙ্গালীকে ঘরে ঢুকবার জন্য লকডাউন,পুলিশ দিয়ে ভয়ভীতি পরিশেষে আর্মি নামাতে হয়েছে।তবুও কি কিছু মানুষের অবাধ বিচরন রুখতে পেরেছেন?এই জাতী আড্ডা প্রিয়,তাদের চায়ের দোকানে বসতে দিলে উঠাতে পারবেন?কোন মতে একবার গেড়ে বসলেই হল।আমরা ইতালী হতে শিক্ষা নিই,তারাও প্রথমে পাত্তা দেয়নি!পরে পুরো দেশ দিশাহারা!!এগুলো খুলা মানে,লক ডাউনের না দেওয়ার সামিল।জনগন ভীতসন্ত্রস্ত,প্লিজ এগুলো বন্ধ করুন।অল্প ভূলের কারনে,খেসারতটা যেন বেশী দিতে না হয়।না হলে কক্সবাজার বাসীর কাছে আপনারা অপরাধী হয়ে থাকবেন।প্রয়োজনে জোড়ালো ভাবে,আরও কঠোর হয়ে এই জেলা বাসীকে ঘরে ঢুকানোর ব্যবস্থা করুন।ধন্যবাদ প্রিয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়।
বিঃদ্রঃ শর্তাবলি দিয়ে কোন কাজ হবেনা।তাদের দেখা দেখি অন্যরাও খুলে বসবে।”

মোহাম্মদ ফেরদৌস লিখেছেন–
“সর্বইনাশ। ঢাকায় কোথাও খোলা নাই। ককসবাজার এর মতো ছোট্ট শহরে কি দরকার ছিলো? এখনতো পর্যটকও নাই। নাকি গরীব মানুষকে বিনামূল্যে খাওয়াবে?”
এরকম আরো অনেক।