মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সংকটে উখিয়া টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প কতটুকু সুরক্ষিত, এ প্রশ্ন বার বার উঠছে। এ বিষয়ে আরআরআরসি অফিসের বক্তব্য হলো-করোনা ভাইরাসজনিত সংকটের শুরুতেই রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোতে খাদ্য সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত সচেতনতা সৃষ্টি ও জরুরি অত্যাবশ্যকীয় কার্যক্রম ছাড়া আর সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোন দেশী-বিদেশী লোক ক্যাম্প গুলোতে আরআরআরসি অফিসের পাস ছাড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছেনা। রোহিঙ্গা শরনার্থীদেরও ক্যাম্পের বাহিরে আসা যাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ। কিন্তু আরআরআরসি এ বক্তব্য বাস্তবতার নিরিখে কতটুকু সঠিক, এ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনেক প্রশ্ন?

খুরশেদ আলম (২৯), পিতা-মোহাম্মদ ইসহাক।দুধু মিয়া (২১), পিতা-মোহাম্মদ। দু’জনেই উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প-৭ এর রেজিস্ট্রাড বাসিন্দা। শুক্রবার ৩০ মার্চ, রাত ৮ টা। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়ার বালুখালী কাষ্টমস অফিসের পাশে হোটেল হাইওয়ে। এই হোটেলের ওয়াই ফাই ব্যবহার করে গোপনে কথা বলার সময় উক্ত ২ জন রোহিঙ্গা শরনার্থীকে হোটেলটির মালিক আবছার চৌধুরী ও ছৈয়দ আলম তাদেরকে হাতেনাতে ধৃত করে। হোটেলের মালিকদ্বয়ের প্রশ্ন হলো-ওয়াই ফাই এর গোপন পাসওয়ার্ড নাম্বার রোহিঙ্গা শরনার্থীদ্বয় কোথায়, কিভাবে পেল? এতরাতে ভয়াবহ করোনা ভাইরাস জনিত সংকটে তারা কিভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বের হলো? রোহিঙ্গা শরনার্থীরা কি তাহলে কারো নিয়ন্ত্রণে নেই?

এ বিষয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বক্তব্য হলো-এভাবে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা ক্যাম্প থেকে যখন তখন বের হয়ে যত্রতত্র ঘুরাঘুরি করলে চলমান করোনা ভাইরাস জনিত সংকট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। রোহিঙ্গা শরনার্থীদের দ্বারা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, মাদক ও অন্যান্য অপরাধ কাজে লিপ্ত ও ব্যাবহার হতে পারে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা। স্থানীয় লোকজনের সাথে সংঘর্ষে জড়াতে পারে। ক্রমান্বয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা মিশে যেতে পারে ইত্যাদি।

৭ নম্বর রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা খুরশেদ আলম ও দুধু মিয়া কিভাবে বের হলো, তা জানার জন্য ক্যাম্প ইনচার্জের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও রাত হয়ে যাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। একই বিষয়ে উখিয়ার ইউএনও মোঃ নিকারুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সিবিএন-কে বলেন, রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের চতুর্দিকে চলমান কাঁটাতারের বেড়া নির্মানের কাজ শেষ না হওয়ায় রোহিঙ্গা শরনার্থীরা অনেক সময় চুরি করে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে লোকালয়ে চলে আসে। এ বিষয়ে উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আক্তার মর্জু বলেন, ক্যাম্পে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে নিরাপত্তারক্ষীরা দায়িত্ব পালন করছেন। তারপরও মাঝেমধ্যে ক্যাম্পের নিরাপত্তা বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা ক্যাম্প থেকে মাঝেমধ্যে বের হয়ে যায় বলে তিনি জানান।
(ধৃত রোহিঙ্গা শরনার্থীদ্বয়ের ছবি উখিয়ার সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ শিকদারের টাইমলাইন থেকে নেওয়া।)