বিদেশ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে ১৪ মার্চ জাতীয় জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে প্রত্যেক রাতে দেশটির নাগরিকরা চিকিৎসাকর্মীদের সরব সমর্থন জানিয়ে আসছেন। প্রত্যাশার এই চিত্র মহামারির যন্ত্রণা থেকে তাদের মুক্তি দিতে খুব কমই কাজে লেগেছে। শুক্রবার দেশটিতে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে, একদিনে মারা গেছেন ৭৬৯ জন। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজারের কাছাকাছি।

বৃহস্পতিবার রেকর্ড সংখ্যক ৮ হাজার ৫৭৮ জন আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছিল। যদিও শুক্রবার তা কিছু কমে ৭ হাজার ৮৭১ জনে নেমে এসেছে। কিন্তু উভয় সংখ্যাই মাত্র এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ভয়াবহ খারাপ। তখন দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮৩৩ জন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আশঙ্কার জায়গা হলো ইতালিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের হার ৮ শতাংশ হলেও শুক্রবার পর্যন্ত স্পেনে এই হার ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

স্পেনে করোনার সংক্রমণ এতো দ্রুতো হওয়ার পেছনে দেশটির সংবাদমাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতির কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। দেশটির বিশ্লেষকরা এটিকে সম্ভাব্য একটি কারণ হিসেবে স্বীকার করলেও আরও বেশ কিছু বিষয়ের কথা বলছেন।

ইউনিভার্সিটি অব নাভারার জনস্বাস্থ্য ও প্রতিরোধমূলক ওষুধ বিভাগের অধ্যাপক সিলভিয়া কার্লোস বলেন, বুধবার পর্যন্ত ইউরোপের সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল কোভিড-১৯ এর প্রভাব দেশগুলোর প্রস্তুতি ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার উপর নির্ভরশীল বলে জানিয়েছে। স্পেনে যেমন দ্রুত বিস্তার ঘটছে এমন ক্ষেত্রে জনবল ও সরঞ্জাম ঠেকানোর নিশ্চয়তা দেয় না। প্রভাব আরও গুরুতর হয়। এর ফলে সমাজের ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে মৃত্যু হয় বেশি। বিশেষ করে যখন চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতরাই আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

বুধবার স্পেনের মেডিক্যাল ইউনিয়ন দেশটির সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জানিয়েছে। এতে যতদ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী প্রদানের নির্দেশ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ স্পেনের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক বলেন, সাধারণভাবে মানুষ লকডাউন মেনে চলছে এবং ছোটখাটো অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন না। এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকি কমছে। কিন্তু হাসপাতালগুলোতে স্যানিটারি সামগ্রীর ঘাটতি রয়েছে করোনার মতো সংকট মোকাবিলার জন্য। যার ফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং এটি বড় বিষয়। সূত্র: আল জাজিরা