৭৮৭ দিন পর বাসায় ফিরলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে বাসা ছেড়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় রাত্রিযাপন করছিলেন তিনি।

আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যেই ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি হন। পরে রিজভী প্রতিজ্ঞা করেন খালেদা জিয়া ঘরে না ফেরা পর্যন্ত তিনিও ঘরে ফিরবেন না। নিজের প্রতিজ্ঞামতো দীর্ঘ ৭৮৭ দিন বিএনপি কার্যালয়ে অবস্থানের পর বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) নিজ বাসায় ফেরেন রিজভী।

বাসায় ফেরার প্রাক্কালে তিনি বলেন, আজ বাসায় ফিরছি। দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় পর যাচ্ছি। ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) কারাগারে নেয়ার পর প্রতিজ্ঞা করেছিলাম বাসায় না ফেরা পর্যন্ত আমিও বাসায় যাবো না। বুধবার (২৫ মার্চ) তিনি বাসায় ফিরেছেন, আমিও আজ বাসায় ফিরছি।

২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি দেশের রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে ও দলের দুর্যোগের সময় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেন রিজভী। সে সময় দেশের রাজনৈতিক অবস্থা বিএনপির জন্য ছিল অত্যন্ত প্রতিকূল। বিশেষ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছিলেন ভয়ঙ্কর আতঙ্কে। দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী সদ্য কারামুক্ত খালেদা জিয়ার মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক পরিবেশ ছিল উত্তেজনাপূর্ণ।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেয়। ওইদিনই পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়।

দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানের সময় নেতাকর্মীরা নিয়মিত তার সঙ্গে কুশল বিনিময় ও প্রয়োজনীয় কাজের জন্য যাতায়াত করতেন। এছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ সম্মেলনে এসে বক্তব্য রাখেন রিজভী। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে ছোট-বড় পরিসরে দুই শতাধিক মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। মিছিল করতে গিয়ে একাধিকবার সরকারি দলের লোকজন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আসায় সমালোচনার পাত্র হয়েছেন দলের ভেতরে ও বাইরে। আহতও হয়েছেন দু’বার। তবুও হাল ছাড়েননি আশির দশকের এ ছাত্র নেতা। যিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিতে আহত হয়েছিলেন।