এ কে এম ইকবাল ফারুক,চকরিয়া :

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বুধবার সকাল থেকে লকডাউনের কর্মসূচীর আওতায় চকরিয়া পৌর সদরের সকল বিপণী বিতান ও গনপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় স্থাণীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সমাগ্রীর দোকান ছাড়া সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একান্ত প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘাতক মরণব্যাধী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন পরামর্শ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনা বাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা প্রশাসনের সাথে সহায়তা করছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) সকাল থেকে একটানা সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বদরখালী, ইলিশিয়া, চৌয়ার ফাঁড়ি বাজার, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, ফাঁসিয়াখালী, লক্ষ্যারচর ও পৌর সদরের কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসচেতনা বৃদ্ধি ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন। এ সময় তাঁরা বলেন, ঘাতক মরণব্যাধী করোনা ভাইরাস থেকে রেহাই পেতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বজায় এবং বিনা কারনে বাড়ির বাইরে না আসার জন্য সর্বস্থরের জনসাধারণকে পরামর্শ দেন তাঁরা।

এদিকে চকরিয়া পৌর সদরে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনার সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা দোকানে না টাঙ্গানোর দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান এ জরিমানা আদায় করেন। এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে পু:ন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অপরদিকে লকডাউন কর্মসূচীর আওতায় বুধবার সকাল থেকে চকরিয়া পৌর সদরের সকল বিপণী বিতান ও গনপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলও অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে যায়। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে মাঠে কাজ করছেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধূরীর নেতৃত্বে কাউন্সিলর ও পৌর প্রশাসনের লোকজন পৌর সদরে করোনা প্রতিরোধে বিরামহীন চেষ্ঠা চালাচ্ছেন। পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে জীবানুনাশক স্প্রে ছিটানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণস্থানে পৌরবাসী হাত পরিস্কারের জন্য পানির ড্রাম ও সাবান বিতরণ করেন পৌর মেয়র আলমগীর চৌধূরী। বিনা কারণে বাড়ির বাইরে না আসার জন্য পৌর কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাইকিং করে কঠোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পৌর সদর ছাড়াও উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সমাগ্রীর দোকান ছাড়া সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিনা কারণে বাড়ির বাইরে না আসার জন্য লোকজনের উপর কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ইউএনও আরও বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সাধারণ জনগনকে বিভিন্ন পরামর্শ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে উপজেলার উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা মাঠে বিরামহীন কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।