বিশেষ সংবাদদাতা
কোন জনপদের মানুষ নিজেদের কৃতকর্মের গোনাহ ক্ষমা চাইলে সেখান আল্লাহর গজব আসতে পারে না। এটা আল্লাহ তায়ালার ওয়াদা। তাই করোনা ভাইরাসকে ভয় না করে সব পাপ কাজ ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করুন।

শুক্রবারে (২০ মার্চ) জুমার খুতবায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব প্রিন্সিপ্যাল আল্লামা মাহমুদুল হক দেশবাসীর প্রতি এই আহবান জানান।

তিনি বলেন, ওই জাতিকে আল্লাহ গজব দিয়ে ধ্বংস করেন না যে জাতি আল্লাহর কাছে ধর্ণা দেয়; মাগফেরাত কামনা করে, নিজের গোনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করে। তাই করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে দেশবাসীকে আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি কোরআন শরীফের সূরা আনফালের ৩৩ নং আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ‘কোন জাতিকে ধ্বংস করেন না, তাদের উপর আজাব দেননা যতক্ষণ তারা আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করতে থাকে’।

কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে আল্লামা মাহমুদুল হক বলেন, আমাদের গোনাহের কারণে করোনা হয়ত গজব হিসেবে আবির্ভাব হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাস আল্লাহর মাগফিরাত ও রহমতের তুলনায় বড় কিছু নয়। সুরা শোরার ৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের উপর যা বালা-মুসিবত আসে তা তোমাদের কর্ম ফল। তবে অধিকাংশই আমি ক্ষমা করে দিয়ে থাকি’।

তিনি বলেন, হিজরতের পর রাসুল (সঃ) এর জীবদ্দশায় মদিনায় একবার ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে হযরত আবু বকর (রঃ) এবং হযরত বেলাল (রঃ) ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। নবীজি ওই ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করেছিলেন।

ঐদিন রাতে রাসূল (সাঃ) স্বপ্নে দেখলেন একজন বুড়ি গাট্টি গোট্টা নিয়ে মদিনা শরীফ থেকে চলে যাচ্ছিল। তখন নবীজি তার পরিচয় জানতে চাইলে বলেছিল সে ছিল ভাইরাস (আপনার দোয়ায়) আল্লাহর নির্দেশে সে মদীনা ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

আল্লামা মাহমুদুল হক বলেন, এখনও করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য সরকারের সতর্কতামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি আমাদেরকে সব ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহর কাছে নিজেদের ভুল ত্রুটি ও গোনাহের জন্য মাগফেরাত চাইতে হবে। ঘরে ঘরে অফিস-আদালতে সব জায়গায় কোরআন তেলাওয়াত এর ব্যবস্থা করতে হবে।

আল্লামা মাহমুদুল হক আক্ষেপ করে বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য চীনে বন্ধ মসজিদ খোলে দেয়া হচ্ছে। আর মুসলিম দেশ সমুহে মসজিদে নামাজ পড়তে বাধা দেয়া হচ্ছে। সৌদি আরবে আল্লাহর ঘরে এবং মসজিদে নববীতে নামাজ আদায় করতে দেয়া হচ্ছেনা। এটা খুবই উদ্বেগজনক।

তিনি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে মসজিদ সমুহ বন্ধ না করে সেখানে বেশি করে নামাজ-দোয়ার ব্যবস্থা করার আহবান জানান।

আল্লাহর গজব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তিনি প্রস্তাবনাও সরকারের কাছে পেশ করেন।

তিনি বলেন, আল্লাহর গজব নাজিল হয় এমন সব কাজ-কাম ব্যক্তিগত ও সরকারীভাবে পরিহার করতে হবে। জুলুম-অত্যাচার থেকে দূরে থাকতে হবে। মদপান, দেহ ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। প্রচার মাধ্যমে বাদ্যযন্ত্র ও নাচগান বন্ধ করে কোরআনের সম্প্রচার বাড়াতে হবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় চরিত্রবান কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

জনগণকে সৎ কাজের প্রতি উৎসাহিত করে সব ধরণের পাপাচার থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ওয়াজ মাহফিল ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে গোটা জাতিকে তৌবায় উদ্বোদ্ধ করতে হবে।