শাহেদ মিজান, সিবিএন:

‘অঙ্কুরই জানান দেয় বৃক্ষের আগাম স্বকীয়তা’। অর্থাৎ যে চারাটি সবল হয়ে জন্ম নেবে তা বৃক্ষ হবে মহীরূপে। বাঙালীর ইতিহাসে জন্ম নেয়া এমন একটি দীপ্যমান উদাহরণ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে মুজিবের জন্ম না হলে হয়তো বাংলাদেশেরও জন্মও হতো। একটি জাতির পিতা এবং একটি দেশের জনক মুজিব স্বল্প দিনেই এমন বলীয়ানরূপে গড়ে উঠেনি। সেই মুজিব জীবনের শুরু থেকেই ছিলেন বিশেষ এক বালক, কিশোর, যুবক এবং নেতা। তিনি আর দশটা শিশু, কিশোর, যুবকের মতো ছিলেন না। বিধাতা তাকে সৃষ্টি করেছিলেন এক বিশেষ মহীমা দিয়ে! তাঁর জীবনপঞ্জির পরতে পরতে এমন ইতিহাস লেখা রয়েছে। পরাধীন বাঙালী জাতির মুক্তি এবং বাংলাদেশ নামের একটি দেশ সৃষ্টির জন্যই হয়তো আল্লাহ বঙ্গবন্ধুকে তেমন রূপে সৃষ্টি করেছিলেন। এক কথায় বলা যায়, তাঁর জন্ম হয়েছিলো এক ‘বিশেষ’ মানুষ রূপে!

অসীম ডানপিটে মুজিব একদিন হয়ে উঠলেন পুরো বাঙালী জাতির নেতা। ‘তিনি ধরণীতে এসেছিলেন, তবে অতিকষ্টে আর জয় করেছিলেন! স্বল্প আয়ুর এই মহান মানুষটি বাঙালী জাতিকে যা দিয়ে গেছে তা একটি জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ পাওয়া। একটি স্বাধীন ভূখন্ড। বাঙালীর এই মহান নেতা ধরণীতে অবতরণের (১৯২০) শতবর্ষ পূর্ণ হয়ে গেলো।

হাজার বছরের এই শ্রেষ্ঠ বাঙালীর জন্মশত বর্ষকে অত্যন্ত শ্রদ্ধাচিত্তে উদযাপন করেছে বাংলাদেশ এবং বাঙালীরা। এই দিবসটি ঘিরে গতকাল ১৭ মার্চ ছিলো এক অনন্য বাংলাদেশ! জাতি এই মহান মানুষটিকে তাঁর জন্মের সার্থকতার মর্যাদা দিয়ে অকুন্ঠ চিত্তে। যদিও করোনা ভাইরাসের কারণে পূর্বনির্ধারিত বড় ধরণের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

সারা দেশের সাথে এক যোগে কক্সবাজার জেলায়ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উদযাপন করা হয়েছে। প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাধ্যমতো আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর নানা আয়োজন করেছে। খতমে কোরআন, তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আনন্দ র‌্যালী, কেক কাটা, আলোচনা সভা এবং শিশু-কিশোর নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন দলের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠন অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে মুজিববর্ষের কর্মসূচী উদযাপন করেছে। এছাড়াও অন্যান্য সংগঠন, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো মর্যাদার সাথে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা করেছে। জেলা পর্যায় থেকে গ্রাম পর্যন্ত কর্মসূচীগুলো উদযাপন করা হয়েছে।

করোনার আতঙ্কে বড় কর্মসূচী স্থগিত করা হলেও সীমিত পরিসরে আয়োজিত মুজিববর্ষের কর্মসূচী বেশ জাঁকজমভাবে উদযাপন করা হয়। এতে এই দিনটি হয়ে উঠে অতিবিশেষ দিন। এসব কর্মসূচীর মধ্যে আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের দিকগুলো বেশ গুরুত্বের সাথে আলোচনয় উঠে আসে। সব আলোচনা সভায় উঠে এসেছে পরাধীন বাঙালী এবং বাংলাদেশের জন্মের জন্যই আল্লাহ বঙ্গবন্ধুকে সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি যে কর্ম রেখে গেছেন বিগত হাজার বছরেও কোনো বাঙালীর তা করতে পারেনি। এই কর্ম এবং অবদান অমর হয়ে থাকবে। আর ইতিহাসের উচ্চ স্তরে থাকবে বঙ্গবন্ধুর স্থান!