ইমাম খাইর, সিবিএন
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বাজারপাড়ায় (বৈরাগিরখিল) প্রবাহমান খালের পাড় দখল করে নির্মিত হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। সরকারী দলের প্রভাব খাটিয়ে দখলবাজ সিন্ডিকেটের সদস্যরা নির্মাণ করছে দোকানপাট।
এলাকার ক্ষমতাহীন, অসহায় মানুষগুলো পারছে না প্রতিবাদ করতে, পারছে না দখলবাজি সইতে। অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছে শক্তিমানদের কাছে।
নাম না জানিয়ে বাজারপাড়ার সত্তরোর্ধ ব্যক্তি জানিয়েছেন, স্থাপনার কারণে বর্ষার পানিতে ডুবে যাবে আশপাশের বসতবাড়ি ও কৃষি জমি। বাধাগ্রস্ত হবে জীবনযাত্রা। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্তত ১০ হাজার জনগণের দীর্ঘদিনের বসতি।
সোমবার (১৬ মার্চ) সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে দেখা গেছে, ডুলাহাজারা বাজারের পশ্চিম ও জামে মসজিদের উত্তর পাশের ‘বগাছরি খাল’ ঘেঁষে ১০টি শেড নির্মাণ কাজ চলছে। নিয়োজিত রয়েছে ৭ জনের মতো নির্মাণ শ্রমিক। যদিওবা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তারা সটকে পড়েছে।
৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাইছারুল হক চৌধুরী, তার ভাই নাসেরুল হক চৌধুরী মিলে ঐতিহ্যবাহী খালের পাড়ে মার্কেট করছেন। চুক্তি করেছেন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সাথে। -অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
তাদের ভাষ্য, নদীর পাড় দখল করে মার্কেট নির্মাণে অন্তত ২০ জন লোক জড়িত রয়েছে। যারা প্রত্যেকেই প্রভাবশালী হওয়ায় এই দখলবাজির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আওয়াজ তুলছে না সাধারণ মানুষ।
তবে, অভিযুক্ত কাইছারুল হক চৌধুরী দোকানঘর নির্মাণ করার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, দোকানঘর আমি করছি না। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মুফিজ উদ্দিনকে জায়গা ভাড়া দিয়েছি। দোকানঘর নির্মাণ করতে যা খরচ হবে তা ‘সেলামি’ হিসেবে গন্য হবে।
নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে দুই পক্ষ মিলে হিসেব চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান কাইছারুল হক চৌধুরী।
জায়গার মালিক তিনি নিজে কিনা? তার নামে কোন খতিয়ান সৃজন হয়েছে কিনা? জানতে চাইলে বলেন, কিছু জমি আমাদের মালিকানাভুক্ত। আর কিছু খাস শ্রেনীর।
নদীর তীর দখল করে খাস জমিতে কেন মার্কেট করছেন? প্রশ্ন করলে কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি কাইছারুল হক চৌধুরী।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে জানিয়েছে, মার্কেট পুরোপুরি রেডি হলে দোকান দেওয়ার শর্তে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে অগ্রিম নিয়েছেন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মুফিজ উদ্দিন। আরো অনেক ব্যবসায়ী টাকা দেওয়ার অপেক্ষায় আছে।
তবে, এ কথার সঠিক তথ্য কেউ নিশ্চিত করে নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসাইনের বক্তব্য জানতে চাইলে কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সাথে আগামীকাল (১৭ মার্চ) এর মধ্যে নির্মিতব্য স্থাপনা উচ্ছেদপূর্বক বিস্তারিত জানাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।
নদী, খালবিল ইত্যাদি সরকারী জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে বলেন, অভিযোগ পেয়ে এসিল্যান্ডসহ তাৎক্ষণিক একটি টিম পাঠিয়ে সরেজমিন রিপোর্ট নিয়েছি। এ সময় নির্মিতব্য কিছু স্থাপনা উচ্ছেদও করা হয়েছে।
সরকারী জমি দখল করে অবৈধ দোকানপাট নির্মাণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ইউএনও নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান।