শাহেদ মিজান, সিবিএন:
তাকেই ঘিরেই থাকে বিতর্ক! কক্সবাজারে দায়িত্ব পালনকালে বহু বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দিয়ে পুরো সময়জুড়ে ছিলেন বির্তকের শীর্ষে ! এই তিনি হলেন কক্সবাজার সদরের সাবেক এসিল্যান্ড নাজিম উদ্দীন। কুড়িগ্রামে সাংবাদিক নির্যাতনে নেতৃত্ব দিয়ে এবার তিনি দেশজুড়ে আলোচনায় এসেছেন। নির্যাতনে শিকার আরিফুল ইসলাম রিগান জামিন পেয়ে গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেছেন, তাকে নির্যাতনে নেতৃত্ব দিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের আরডিসি নাজিম উদ্দীন। শুধু তাই নয়; সাংবাদিক রিগানকে একমাত্র নাজিম উদ্দীনই মারধর করেছেন। এছাড়াও অকথ্য গালাগালও করেছেন।
বাংলাট্রিবিউনের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনের নির্দেশে নির্মম নির্যাতন ও আইনের ‘অপব্যবহার’ করে এক বছরের জেল দেয়া ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। কিন্তু এই ঘটনার সাথে কক্সবাজারের সাবেক এসিল্যান্ড নাজিম উদ্দীন অগ্রভাগের থাকার খবর বের হলে কক্সবাজারে এখন তাকে নিয়েই বেশ সমালোচনা চলছে। অবশ্য রিগানের বক্তব্যের পর পুরোদেশেও এখন নাজিম উদ্দীনকে এই ঘটনার ভিলেন হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে বাংলাট্রিবিউনের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান মারধর এবং গালাগালের করার খবর সংবাদ মাধ্যম জানাজানি হলে কক্সবাজারের বেশ একপ্রকার শোরগোল শুরু হয়েছে। এই ঘটনার রেশ ধরে নাজিম উদ্দীন কক্সবাজারে এক বৃদ্ধকে জামার কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে আনার সেই ছবি ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে আবার পোস্ট করেছে কক্সবাজারের সচেতন লোকজন। বিশেষ করে নাজিম উদ্দীনের হাতে লাঞ্ছিত, ক্ষতিগ্রস্ত এবং তার উপর সংক্ষুব্ধ লোকজন নিন্দা জানিয়ে পোস্ট করেছেন। একই সাথে তাকে ধিক্কার জানানো হচ্ছে। ফেসবুক এবং সরাসরি অনেকে বলছেন, ‘কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না’।
কক্সবাজারের সচেতন লোকজন বলছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের আগে শুদ্ধাচারসহ সব ধরণের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে পদায়ন করা হয়। কিন্তু নাজিম উদ্দীনের মধ্যে সেই প্রশিক্ষণলব্ধ শুদ্ধাচার (ভদ্রতা) ছিলো না। তিনি সব সময় নিজেকে মাস্তানের ভূমিকায় রাখতেন। অভিযানে গিয়ে এক বৃদ্ধকে জামার কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে নির্যাতনের একটি ঘটনা ব্যাপক সমালোচনা জন্ম দিয়েছিলো। তার এসব আচরণের কারণে খোদ জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বিব্রত ও ক্ষুব্ধ ছিলেন।
কক্সবাজারে দায়িত্ব পালনকালে ভূমি অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি, সেবাপ্রার্থী এবং সাধারণ মানুষকে মারধর, গালাগালসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। এক পর্যায়ের তা সীমা অতিক্রম করে। ফলে ভুক্তভোগীরা প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিলো। এসব অপকর্মের কারণে তৎকালীন এসিল্যান্ড নাজিম উদ্দীনকে স্টেন্ড রিলিজ করে রাঙামাটির দুর্গম জোছড়ি উপজেলায় এলাকায় বদলী করা হয়েছিলো। সেখানে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করে তদবীর করে সেখান থেকে বদলী হয়েছিলেন জানা গেছে এই বহুল বিতর্কিত আমলা। সেই সময় তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের সাংবাদিকরা ব্যাপক লেখালেখি করেছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে আরডিসি নাজিম উদ্দীন কুড়িগ্রামের সাংবাদিক রিগানকে নির্যাতন করেছে অনেকে ধারণা করছেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় আরিফুল ইসলামকে। তার বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ আনা হয়। এরপর গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের কারাদ- দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।