মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি
রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে। তাই তাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম।
গত ৬ মার্চ সকাল ১১ টায় বহিষ্কৃত ৫ শিক্ষক মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা করে। ওইদিন শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতিরোধ করেন এবং ৯৯৯-এ ফোনে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলার প্রতিবাদে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ-মানববন্ধনও করেন।
এরপর থেকে বহিষ্কৃতদের অপতৎপরতায় শংকিত হয়ে এ আবেদন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। গত শুক্রবার করা এ আবেদনে সন্ত্রাসী ঘটনার বিবরণ ও অপরাধীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আলা উদ্দিন।
আবেদন সূত্রে জানা গেছে দীর্ঘ ৯ বছর আগে মাদ্রাসার গভর্নিং বড়ি কর্তৃক জঙ্গি ও নারী সংক্রান্তসহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে ক্রমান্বয়ে বহিষ্কার হন ৫ শিক্ষক যথাক্রমে আবদুল হামিদ,ফরিদ উদ্দিন,মোঃ আইয়ুব,রাজিয়া আক্তার,রেজাউল করিম। তার বহিষ্কার হওয়ার পর হতে মাদ্রাসায় আজ পর্যন্ত কোন দিন ক্লাস করেন নি। এর মাঝে সম্প্রতি অধ্যক্ষ মওলানা ওবাইদুল হাকিম একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এক পরিপত্রের মাধ্যমে সিনিয়র শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাযিত্ব দেয়।
সভাপতি মোঃ আইয়ুব সিকদার, অভিভাবক শাহ আলমসহ অনেকে জানান গর্জনিয়া ইউনিয়নের সুনামধন্য এ মাদ্রাসাটিতে অধ্যক্ষের দাবীতে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে জন্ম নেয় অহরহ ঘটনা। বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকরা কোনমতে পাঠদান দিয়ে আসছেন। কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছর পর গত ৬ই মার্চ থেকে আবারো শুরু হয়েছে হামলা পাল্টা হামলা। এ জন্য শিক্ষক,আমরা ছাত্র-ছাত্রী উদ্বিগ্ন।
সাইফুল ইসলাম জানান, বরখাস্তকৃত শিক্ষকরা জনতা ব্যাংক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনৈতিক পন্থায় বশিভূত হয়ে পরষ্পর যোগসাজে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে যাহা দুদক বরাবরে অভিযোগ করেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। তারা মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার আতংকে মাদ্রাসা দখল করে অফিসের রেকর্ড পত্র নষ্ট করে নিজেদের রক্ষা করতে হামলা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বহিষ্কৃতরা কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে ক্যাম্পাসে অনধিকার প্রবেশ করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও একাডেমিক শৃঙ্খলার স্বার্থে জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে এ আবেদন করা হয়েছে।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়ের মাদ্রাসার ঘটনার বিষয়ে বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কেউ কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমার মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, মাদ্রাসার বেতন উত্তোলন নিয়ে জটিল সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। মাদ্রাসার সভাপতিকে জানতে চাইলে তিনি এটা কোন বিষয় নয় সেখানে অধ্যক্ষের বিষয়ে সমস্যা। আমি মুজিববর্ষ নিয়ে ব্যস্ত আছি। ১৭ মার্চের পরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে এটির সমস্যা নিরসনে কথা জনান এ প্রতিবেদককে।
অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল হামিদসহ ৫ শিক্ষকরা জানান, তারা মাদ্রাসার বৈধ শিক্ষক আবদুল হামিদকে অধ্যক্ষ বলে দাবী করে বলেন,গত মাসে অধ্যক্ষ আবদুল হামিদের স্বাক্ষের বেতন উত্তোলন করে সবার মাঝে বিলি করা হয়। মাদ্রাসায় ক্লাস ও নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করে কি ভাবে বেতন উত্তোলন করেছেন জানতে চাইলে তারা মাদ্রাসার বাহিরে খাতা পত্র তথা রেজিস্টার তৈরী করে কার্যক্রম পরিচালনা করি সে অনুযায়ী বেতন উত্তোলন করা হয়।