এ কে এম ইকবাল ফারুক, চকরিয়া:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশী হামলা ও নির্যাতনের শিকার যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদী ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বসতবাড়ি মুক্তিযোদ্ধা কুঠির পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাংসদ আলহাজ্ব জাফর আলম। সৌদি আরবে পবিত্র ওমরা পালন শেষে দেশে ফেরার পর বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে তিনি লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ছিকলঘাটস্থ মুক্তিযোদ্ধা কুঠির পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা কুঠিরের ছয়টি কক্ষে পুলিশী তান্ডবের ভয়াবহ চিত্র ঘুরে ঘুরে দেখেন। পরে সাংসদ জাফর আলম পুলিশী তান্ডবের শিকার মুক্তিযোদ্ধা কুঠিরের নির্যাতিত সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।

এসময় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর সহধর্মীনি ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নেচারা বেগমসহ মুক্তিযোদ্ধা কুঠিরের নির্যাতিত সদস্যরা একে একে সবাই তাদের বাড়িতে ঘটনার দিনের পুলিশী তান্ডব ও ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র সাংসদ জাফর আলমের কাছে তুলে ধরেন। পরে সাংসদ জাফর আলম মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশের পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির আশ্বাস প্রদান করেন। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর জৈষ্ঠ ছেলে রেজাউল করিম সেলিম।

প্রসঙ্গত: গত ৫ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে চকরিয়ায় যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বসতবাড়িতে (মুক্তিযোদ্ধা কুঠির) ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায় চকরিয়া থানার সাদা পোষাক ও পোষাকধারী একদল পুলিশ। এসময় পুলিশ দলের সদস্যরা অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ির দেয়ালে টাঙ্গানো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধার কুটিরের ছয়টি কক্ষের আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং তল্লাসীর নামে বাড়ির আলমিরা ভেঙ্গে ২০ ভরি ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ চারলাখ টাকা ও ১৬০ সিসির টিবিএস মডেলের একটি মোটরসাইকেল লুট করে নিয়ে যায়। হামলা ও লুটপাটের সময় পুলিশের বেদড়ক পিটুনীতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধু ও নাতী-নাতনীসহ আটজন আহত হয় বলে দাবী করা হয় নির্যাতনের শিকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে।

নির্যাতনের শিকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে আরো দাবী করা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে রনাঙ্গনে যুদ্ধ করা একজন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে স্থাণীয় লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা গোলাম মোস্তফা কাইছারের ইন্দনে থানা পুলিশের এ বর্বরোচিত হামলা ও লুটপাটের ঘটনার দায় চকরিয়া থানার ওসি কোনদিনই এড়াতে পারেননা। তাই নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের স্বার্থে থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমানের প্রত্যাহারের দাবী জানান ভূক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা।