নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের মহেশখালীর হোয়ানকে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় ছৈয়দ আলম (৪০) নামে লবণ চাষী গুরুতর আহত হয়েছেন। ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে সৈয়দ আলমের দু’টি হাত।
বুধবার (১১ মার্চ) বেলা দেড়টার দিকে হোয়ানক ইউনিয়নের রাজুয়ার ঘোনার পশ্চিমে বদরঘোনা নামক লবণ মাঠে এই ঘটনা ঘটে।
আহত ছৈয়দ আলম মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের বড়ছড়া গ্রামের মাওলানা ছিদ্দিক আহমদের ছেলে। তাকে গুরুতর অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত কেউ আটক হয় নি। সদ্য জেলফেরত ওসমান বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ আহতের স্বজনদের।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছেন, ইউনিয়নের হোয়ানক মৌজার আরএস ৫০ নাম্বার খতিয়ানের জমি নিয়ে দু’টি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। যা নিয়ে মামলা কক্সবাজার সহকারী জজ ১ম আদালতে বিচারধীন রয়েছে। ওই বিষয় নিয়ে মহেশখালী থানায় কয়েকবার শালিশী বৈঠকও হয়েছে। শালিশী বৈঠকে উভয়পক্ষকে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, আদালত ও মহেশখালী থানার নির্দেশ অমান্য করে জেল থেকে সদ্য মুক্তি পেয়ে হোয়ানক রাজুুয়ার ঘোনার মৃত মুজাহের মিয়ার ছেলে ওসমানের নেতৃত্বে তার ভাই মোহাম্মদ হোসেন ওরফে বাইশ্যা, আনু মিয়ার ছেলে বদি আলম, মো. ছৈয়দ, বদি আলমের ছেলে শাকের উল্লাহ, মো. সোলতান, সালামত উল্লাহ, নেয়ামত উল্লাহ, আবদুল মাবুদের ছেলে আবদুল মান্নান, দেলোয়ার হোসেন, বেলাল, মোঃ জালালের ছেলে নুরুল মোস্তফসহ অন্যরা লবণ চাষী ছৈয়দ আলমের উপর হামলা চালায়। তাদের সশস্ত্র হামলায় ছৈয়দ আলম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসিরা তাদের ইচ্ছে মতো আঘাত করে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় মাঠেই ফেলে রেখে যায়।
লবণ শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছিদ্দিক আহমদের ছেলে ছৈয়দ আলম লবণ মাঠ দেখতে যান। লবণ মাঠ দেখে চলে আসার পথে লবণ চাষা দেলোয়ারে সাথে কথা বলছিলেন। ওই সময় হঠাৎ সন্ত্রাসিদের জড়ো হতে দেখলে ছৈয়দ আলম আত্মরক্ষার জন্য অন্য লবণ চাষীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তাদের মতে, পাশের লবণ চাষিরা ছৈয়দ আলমকে রক্ষার চেষ্টা করলে তাদেরও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সন্ত্রাসিরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন লবণ চাষী বলেন, সন্ত্রাসিরা আগে থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে প্রস্তুত ছিল।
এদিকে স্থানীয়রা ছৈয়দ আলমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে হোয়ানক টাইমবাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অপরদিকে আহত ছৈয়দ আলমকে প্রথমে মহেশখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, দুইপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে, হামলার ঘটনাটি আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, ওসমান বাহিনীর লোকজন প্রতিপক্ষকে বিভিন্ন সময় নানামুখি হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি তারা থানায় অবহিত করে। ঘটনার আশঙ্কা করে মহেশখালী থানায় জিডি করেন হোয়ানকের বড়ছড়ার বাসিন্দা মৃত ফজল আহমদের ছেলে মো. নোমান লেদু। যার নং- ১০৪৪/২০২০। জিডিতে ওসমান বাহিনীর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এরপর গত ২৯ ফেব্রুয়ারী সদর মডেল থানায় জিডি করেন সরকারী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান। যার নং-১১৩২/২০২০। জিডিতে কারাফেরত ওসমানসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।