প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজারের উখিয়ার শৈলেরডেবা চন্দ্রোদয় বৌদ্ধ বিহারে শুক্রবার ( ১৩ মার্চ ) থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘বৌদ্ধ সংঘসম্মেলন-২০২০’। সম্মেলন সফল করতে নেয়া হয়েছে চুড়ান্ত প্রস্তুতিও। শেষ পর্যায়ে রয়েছে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল, মঞ্চ ও তোরণ নির্মাণের কাজও।
এ নিয়ে সারাদেশের বিভিন্ন বৌদ্ধপল্লীতে চুড়ান্ত পর্যায়ের প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি উদযাপন কমিটির উপ-কমিটিগুলোর নানা প্রস্তুতিমূলক সভাও ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন সম্মেলন উদযাপন কমিটির দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার ( ১১ মার্চ ) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বৌদ্ধ সংঘসম্মেলন উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী জ্যোতি:প্রিয় ভিক্ষু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে জানানো হয়েছে, বঙ্গীয় বৌদ্ধ সমাজের অবক্ষয়রোধ, বুদ্ধের সদ্ধর্মের শ্রীবৃদ্ধি ও বৌদ্ধদের ধর্মীয় গুরু ভিক্ষুসংঘের সংহতি রক্ষাকল্পে শুক্রবার ( ১৩ মার্চ ) থেকে দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ‘মহতি সংঘসম্মেলন-২০২০’ উখিয়ার শৈলেরডেবা চন্দ্রোদয় বিহারে অনুষ্ঠিত হবে।
‘বিশ্বজ্যোতি মিশন কল্যাণ ট্রাস্টের’ উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনে সারাদেশের ৫ শতাধিক ভিক্ষুর পাশাপাশি ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ প্রধান রাষ্ট্রের খ্যাতিসম্পন্ন ভিক্ষুসংঘ, বুদ্ধদর্শনবিদ ও শিক্ষাবিদসহ বিশিষ্ট ধর্মীয় নেতারাও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
ইতিমধ্যে দেশের নানা প্রান্তের বৌদ্ধপল্লীর বিহারগুলো থেকে ভিক্ষুসংঘ ও গৃহীসংঘের নিবন্ধিতরা উখিয়ায় এসে পৌঁছেছেন। বিদেশি ভিক্ষুসংঘ সহ আমন্ত্রিত অন্য অতিথিরা বৃহস্পতিবার ( ১২ মার্চ ) সন্ধ্যার মধ্যে এবং কাল শুক্রবার ( ১৩ মার্চ ) এসে পৌঁছাবেন।
অনুষ্ঠিতব্য দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ভিক্ষুসংঘ ও গৃহীসংঘের যৌথ অংশগ্রহণে কনভেশনের পাশাপাশি বঙ্গীয় সমাজে ‘থেরবাদী ঐতিহ্য রক্ষায় সাঙ্ঘিক জীবনের করণীয় কর্তব্য ও একতার গুরুত্ব’সহ বুদ্ধের ধর্ম ও দর্শন চর্চায় আগামীদিনের নীতি-নির্ধারণীমূলক কয়েকটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে উত্থাপিত প্রস্তাবনা সমূহ সিদ্ধান্ত আকারে বঙ্গীয় বৌদ্ধ সমাজে প্রচার ও প্রসারে চর্চার উদ্যোগ নেবে এ ‘বৌদ্ধ সংঘসম্মেলন’।
সম্মেলন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হবে অষ্ট-পরিস্কারসহ মহাসংঘদান, বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা, কর্মযোগী জ্ঞানালংকার ও ডক্টর কাচ্চায়ন পাঠাগার উদ্বোধন, সুরম্য নাগসেন-মিলিন্দ বৌধি চৈত্য (প্যাগোডা) উদ্বোধন, জ্ঞানসেন বৌদ্ধ ভিক্ষু-শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা কেন্দ্রের ২ দশক পূর্তি উৎসব, স্থবির বরণ অনুষ্ঠান, গৃহীকূলের প্রব্রজ্যা ও শ্রামণকূলের উপসম্পাদা প্রদান অনুষ্ঠানসহ ২ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী।
সম্মেলন উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী জ্যোতি:প্রিয় ভিক্ষু জানিয়েছেন, সম্মেলন উপলক্ষ্যে হাজারো মানুষ ও ভিক্ষুসংঘের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশাল প্যান্ডেল, তোরণ ও মঞ্চ তৈরীর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার ( ১২ মার্চ ) বিকালের মধ্যেই বাকী থাকা কাজগুলো শেষ হবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠানস্থল সহ আশপাশের বিশাল এলাকা।
এদিকে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে বুধবার ( ১১ মার্চ) বিকালে উখিয়ার শৈলেরডেবা চন্দ্রোদয় বৌদ্ধ বিহারে উদযাপন কমিটির এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্বজ্যোতি মিশন কল্যান ট্রাস্টের প্রধান পৃষ্টপোষক শ্রীমৎ কুশলায়ন মহাথেরো’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতি:প্রিয় ভিক্ষু, জ্যোতি:লায়ন ভিক্ষু, জ্যোতি:শান্ত ভিক্ষু, জ্যোতি:মঙ্গল ভিক্ষু, উখিয়া নুরুল ইসলাম চৌধুরী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিলন বড়ুয়া, বৌদ্ধ সমিতি যুব কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট অনিল বড়ুয়া, রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: নোবেল কুমার বড়ুয়া, বৌদ্ধনেতা প্লাবণ বড়ুয়া, বাবুল বড়ুয়া, শিক্ষক মেধু বড়ুয়া ও রাহুল বড়ুয়া আদিত্য সহ উদযাপন কমিটির বিভিন্ন উপ-পরিষদের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
এদিকে বুধবার (১১ মার্চ) বিকালে সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি ও কার্যক্রম পরির্দশনে যান উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও তরুণ সমাজ সেবক হেলাল উদ্দিনসহ স্থানীয় বিশেষ ব্যক্তিবর্গের প্রতিনিধি দল। এসময় প্রতিনিধি দলটি উদযাপন কমিটির কাছে নগদ ১ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন এবং আয়োজনের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নেন।
সম্মেলনে বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু সংঘরাজ ড. ধর্মসেন মহাথের এবং ভারতীয় বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু সংঘরাজ ড. সত্যপাল মহাথের সবক’টি আয়োজনের আচার্য্য এর দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান উদযাপন পরিষদের এ সাধারণ সম্পাদক।
সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শ্রী জ্যোতি:প্রিয় ভিক্ষু।