আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ইতালির ৬ কোটি মানুষ। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী গিসেপে কন্তে লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

পুরো দেশজুড়েই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর আগে দেশটির ১৪টি প্রদেশে ৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। কিন্তু এখন তা বাড়িয়ে দেশটির ২০টি প্রদেশের সবগুলোতেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কন্তে লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সফরের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, এখন আর সময় নেই। যারা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন তাদের সুরক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

ইতালিতে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৪৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ১৭২। চীনের বাইরে ইতালিতেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

করোনার প্রকোপে চীনের পর ইতালিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রোববার দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ইতালির ২০ প্রদেশের সবগুলোতেই করোনায় আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, কোনো কাজ বা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কারো ঘরের বাইরে বের হওয়া বা অন্য কোথাও ভ্রমণের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেছেন, সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে এবং সব ধরনের খেলাধুলার ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে। আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এই বিধি-নিষেধ জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, লোকজনের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে বাড়িতেই অবস্থান করা। এখানে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। পুরো ইতালিই একটি সুরক্ষিত অঞ্চলে পরিণত হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। কন্তে আরও বলেন, ইতালির ভালোর জন্য কিছু জিনিস ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের এখনই সেটা করতে হবে।

সোমবার সকালে দেশটিতে একটি কারাগারে দাঙ্গায় সাত বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। কারাগারে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ করোনাভাইরাসে বিস্তার ঠেকাতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দেশটির কারাগারগুলোতে বিশৃঙ্খলকা তৈরি হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১৪ হাজার ৪২২ জন আক্রান্ত হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৪ হাজার ২৭ জন। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৬৪ হাজার ৮১ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চীনে। সেখানে ৮০ হাজার ৭৫৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ১৩৬ জন।