আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
ভয়াবহ করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ১১৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের শ্বাসকষ্ট থাকায় তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়েছে। তাদের অ্যান্টি-ভাইরাল চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীরই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মালয়েশিয়া সরকার তাদের সর্বোচ্চ তাগিদ দিচ্ছে। কোভিড-১৯ ঠেকাতে আরও শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্থানীয় ও অভিবাসী সবার নিরাপত্তায় আমরা সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য মহাপরিচালক দাতুক ডা. নূর হিশাম আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেকটি প্রদেশ এবং এলাকায় হাসপাতাল নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। যাতে যেকোনো দেশের নাগরিকের দেহে করোনাভাইরাসের উপসর্গ প্রকাশ পেলে বা আক্রান্ত হলে চিকিৎসা নিতে পারে। এ নিয়ে আতঙ্কিত কিংবা দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’ ভাইরাস প্রতিরোধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সকল চেক পয়েন্ট ও বিমানবন্দরগুলোতেও গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক খাইরুল জাইমি দাউদ ও ইমিগ্রেশনের সুরক্ষা এবং পাসপোর্ট বিভাগের প্রধান দাতুক মোহাম্মদ জুলফিকার আহমদ স্বাক্ষরিত এক নোটিশে মালয়েশিয়ার সকল ইমিগ্রেশনের পরিচালকদের জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়ার সকল অটোগেইট লেন, ন্যাশনাল এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন বায়োমেট্রিক সিস্টেমের (এনআরএস) এবং ই-গেইট অটোমেটেড ক্লিয়ারেন্স সিস্টেম বন্ধ করার বিষয়ে বলা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এ সকল ই-গেইট ও অটোমেটিক গেইট আগামী নির্দেশনা দেয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

এদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের পরামর্শ দিয়েছে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন।

সোমবার হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাস জনিত রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে যাবতীয় চিকিৎসার জন্যে মালয়েশিয়া সরকার হাসপাতাল নির্ধারণ করে দিয়েছে। দুঃশ্চিন্তা বা আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান তিনি।

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি’। আমাদের সকলকে প্রয়োজন ছাড়া লোকসমাগম এড়িয়ে চলা এবং মালয়েশিয়া সরকারের আইন মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকমিশনার। সেইসঙ্গে হাইকমিশনের যে জরুরি নম্বরগুলো রয়েছে সেগুলোতে ফোন দিয়ে তথ্য জেনে নিতে বলেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে ১ লাখ ১১ হাজার ৩৫১ জন আক্রান্ত হয়েছে। ৩ হাজার ৮৮২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মুক্তি লাভ করেছেন ৬২ হাজার ৬৬১ জন। এখনও ৪৪ হাজার ৮০৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাংলাদেশে তিন জন আক্রান্ত হয়েছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে।