সিবিএন ডেস্ক:

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, ‘গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দেশে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের নমুনা সংগ্রহ করেছি, তবে তাদের কারোর মধ্যেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তার মানে এ পর্যন্ত সর্বমোট সর্বমোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিনজনই।’

সোমবার রাজধানীর মহাখালিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইডিআরএ সম্মেলন কক্ষে নিয়মিত প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্তের কথা জানানো হয়। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন ইতালিফেরত। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ তিনজন ছাড়া আরও দুজনকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

আজ ব্রিফিংয়ে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘গতকাল যখন জানিয়েছি যে, বাংলাদেশে তিনিজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তারপর থেকে হটলাইনে ৫০০ ফোনকল পেয়েছি। অনেকেই হটলাইনে ঢুকতেও পারছেন না, কারণ বিজি থাকছে। ৫০০ কলের মধ্যে ৪৭৯টি কলই হচ্ছে করোনা সংক্রান্ত। অনেকেই আমাদের বিভিন্ন তথ্য জানার জন্য কল করছেন।’

তিনি বলেন, ‘আইইডিসিআরে সরাসরি এসেছেন ১৮ জন। যারা বিদেশ থেকে আসছেন, আক্রান্ত দেশের সংখ্যা এখন অনেক। যারা আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসছেন তারা অবশ্যই ১৪ দিন বাড়িতে অবস্থান করবেন। এ ১৪ দিন বাড়িতে অবস্থানের ক্ষেত্রে তাদের যারা প্রতিবেশী বা বন্ধু-বান্ধব তাদের সহযোগিতা চাইব। যদি বিদেশ থেকে এসে কেউ বাইরে বেরিয়ে আসে তবে তাদের মনে করিয়ে দেন যে, উনাকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। অনেক সময় হয়তো উনাদের খেয়াল থাকতে নাও পারে। কিন্তু ১৪ দিন তাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতেই হবে।’

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘যারা দেশের বাইরে থেকে আসছেন তাদের সঙ্গে আশপাশের প্রতিবেশীরা বা বাড়ির মলিকরা শঙ্কিত হয়ে একটু ভিন্ন আচরণ করছেন। আমরা যদি তাদের সহযোগিতা না করি, তাদের যদি বাসা থেকে গিয়ে হোটেলে বা অন্য কোথাও থাকতে হয় তাহলে কিন্তু এটা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমরা ইতোমধ্যে বারবার বলেছি যে, বিদেশ থেকে আসলেই কিন্তু আক্রান্ত নন। যদি কেউ সংক্রমিত হয়েও থাকেন এবং বাইরে ঘোরেন তাহলে এটা ছড়িয়ে পড়বে। তাই তারা যেন বাড়িতেই থাকেন, সে সহযোগিতা করতে হবে।’

করোনাভাইরাসের বিশ্ব পরিস্থিতি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত আক্রান্ত দেশের সংখ্যা হচ্ছে ১০২টি। নতুনভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮টি দেশ। সারা বিশ্বে কারোনায় আক্রান্ত নিশ্চিত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৫৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৫৬ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা তিন হাজার ৫৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতৃবরণ করেছেন ৯৮ জন।

চীনে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় চীনে ৪৬ জন্য করোনায় আক্রান্ত হন। চীনে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩ হাজার ১০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২৭ জন। চীনের বাইরে ১০১টি দেশে নিশ্চিত রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৭২৭ জন। চীনের বাইর অন্যান্য দেশে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় চীনের বাইরে ৭১ জন মারা গেছেন।