মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কুঃ
এশিয়া মহাদেশের একমাত্র গয়াল প্রজনন ও গবেষণা কেন্দ্র পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অবস্থিত। যেটি বর্তমানে নিরাপত্তাহীন ও দুর্বৃত্তদের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে।
রবিবার (৮মার্চ) বিকাল ৩ টার দিকে এখানে বহিরাগতদের আক্রমণে আব্দুর রহিম নামে এক কর্মচারী আহত হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, দুপুর ৩ টার দিকে টেকনাফ থেকে শিক্ষা সফরে ৫টি গাড়িযোগে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি গয়াল গবেষনা প্রজনন কেন্দ্রে দর্শনের জন্য প্রবেশের চেষ্টাকালে প্রজনন কেন্দ্রের স্টাফদের সাথে তাদের অনুমতি প্রসঙ্গে কথা চলাকালীন সময়ে পাশ্বর্বতী রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের বহিরাগত দুই যুবক পর্যটকদের পক্ষ হয়ে জোর করে প্রজনন কেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করে থামানোর চেষ্টা করলেও তারা মারমুখী হয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে। এতে বাধা দিতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এলাকায় আতংক সৃষ্টি হলে এলাকাবাসী এসে ঘটনা নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় বহিরাগতদের হামলায় কর্মচারী আব্দুর রহিম গুরুতর আহত হয়।
আহত রহিম জানান, আমরা প্রথমে তাদেরকে একটু পরে প্রবেশের অনুরোধ করি। কারণ সেই সময় ঢাকা থেকে আগত অফিসাররা আসার কথা থাকায় তাদের বারণ করলে কিছু বুঝে উঠার আগেই কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামের নুরুল হাকিমের ছেলে মোঃ এহেছান ও তার বন্ধু আওয়াল আমার বিরুদ্ধে চড়াও হয়ে প্রথমে আমাকে ধাক্কা দেয়। পরবর্তীতে আমাকে কিল ঘুষি মেরে কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করে। সাথে সাথে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে।
শিক্ষা সফরে আসা টেকনাফ উপজেলার শাপলাপুর দারুল ইসলাম দাখিল মাদরাসার সভাপতি মাওলানা ছৈয়দুল করিম বলেন, হামলাকারী দুই যুবক আমাদের দলের বা পরিচিত কেউ নন। আমরা মাদরাসার তিন শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন লেক উপভোগ করি। পরবর্তীতে এই গয়াল প্রজননটি দেখতে এসে অনুমতি চাইলে হারুন নামেরএক লোক একটু পরে যাওয়ার অনুরোধ করে। অন্য যুবকরা কেনই বা এই ঘটনা ঘটাল তা আমাদের জানা নেই।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার এস আই মোঃ রাজিব বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ নাইক্ষ্যংছড়ির পর্যটন স্পটসহ প্রতিটি সরকারি সম্পদ রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
নাইক্ষ্যংছড়ি বিএলআরআই গবেষণা ইনষ্টিটিউট এস.ও মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেন, এটি একটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ। যেখানে গবাদি প্রজনন ও গবেষণা কেন্দ্র। এখানে বাহিরের দর্শনার্থীরা প্রবেশ করা সম্পূর্ণ নিষেধ। কারণ বিভিন্ন রোগ জীবাণুর কারণে বায়ু দূষনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত বিএআরআই ইনষ্টিটিউটের আওতাধীন হাঁস-মুরগী, ভেড়া ও গরু নিরাপদ উৎপাদনের প্রতিক্রিয়া জাতকরণের বিষয়ে তিনদিন ব্যাপি তিন সেক্টরে প্রশিক্ষণ চলছিল। সে সুবাদে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব কাজি ওয়াছি উদ্দিন, বাংলাদেশ প্রাণী সম্পদ গবেষনা ইনষ্টিটিউট এর মহা পরিচালক ডক্টর নাথুরাম সরকার গত ৭ই মার্চ এটি পরিদর্শন শেষে সাধারণের উন্মুক্ত বিচরনে নিষেধ করেন।