শাহ মুহাম্মদ রুবেল
অপরাধ নির্মূলে প্রায়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে চোরাকারবারি, ডাকাত ও মাদক কারবারিদের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটছে। পৃথক এসব বন্দুকযুদ্ধে গত ৭ দিনে (১ মার্চ থেকে ৭ মার্চ) নিহত হয় ৯ জন। এছাড়া আহত হয় তিনজন। কক্সবাজার জেলায় বন্দুকযুদ্ধে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এর মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সাত রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত হয়।

গত ২ মার্চ ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত টেকনাফের জাদিমোরা ও শালবনের পাহাড়ে থেমে থেমে দীর্ঘ চার ঘণ্টার অভিযানে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ৫শ থেকে ৬শ রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

নিহত ডাকাত দলের সদস্যরা হলো- মোহাম্মদ ফারুক (৩০), মোহাম্মদ আলী (২৫), নুর হোসেন ওরফে নুর আলি ও ইমরানসহ (৩২) অজ্ঞাত আরও তিনজন।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫-এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা-মোছনির মাঝামঝি ‘এডোরা’ নামক গভীর পাহাড়ে কুখ্যাত রোহিঙ্গা ডাকাত জকির গ্রুপের সদস্যদের অবস্থানের খবরে গত ১ মার্চ রাত ১০টার দিকে র‌্যাবের কয়েকটি টিম সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ মার্চ ভোরে তার নেতৃত্বে র‌্যাবের আরও একটি বিশেষ টিম (বড়) চিহ্নিত ওই পাহাড়ে পৌঁছালে সশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্যরা আবারও এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে চার ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধ চলতে থাকে।

পরে সকাল ৯টার দিকে পাহাড়ে ডাকাত সদস্যরা আত্মগোপনে চলে যায়। একপর্যায়ে র‌্যাব সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে ৩টি বিদেশি পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি, ৭টি ওয়ান শুটার গান ও ১৩ রাউন্ড কার্তুজের গুলি উদ্ধার করে। একই সময় রোহিঙ্গা ডাকাত গ্রুপের সাত সদস্যের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে টেকনাফ র‍্যাব ক্যাম্পের ইনচার্জ মির্জা শাহেদ মাহাতাব বলেন, হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোড়া ২৭ নম্বর ক্যাম্প পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর সুবাদে গহীন পাহাড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে ৪ থেকে ৫টি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুখ্যাত জকির ডাকাত ওরফে জকির আহমদ গ্রুপ। তারা গহীন পাহাড়কে আশ্রয়স্থল বানিয়ে সেখানে খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই অপহরণসহ মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া একই দিনে ওই এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত এক মাদক কারবারি নিহত হয়।

গত ২ মার্চ টেকনাফের জাদিমোরা খাল সংলগ্ন পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিজিবির তিন সদস্য আহত হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দেড় লাখ পিস ইয়াবা, একটি দেশীয় অস্ত্র ও ২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার ধারাবাহিকতায় গত ৬ মার্চ কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অজি উল্লাহ (৩০) নামে এক রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত হয়।

এ ঘটনায় ওসিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। একই সময় সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকসহ তিন ডাকাতকে আটক করা হয়।

নিহত অজি উল্লাহ টেকনাফের নিবন্ধিত নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। সে কুখ্যাত ডাকাত জকির আহমদের সহযোগী বলে জানায় পুলিশ।