নুরুল আমিন হেলালী:
চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুরপাল্লার ভারি যানবাহনের সাথে পাল্লা দিয়ে সমান তালে চলছে অবৈধ টমটম ও ব্যাটারী রিক্সাসহ তিন চাকার যানবাহন। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে যানজট, ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকটা হাইওয়ে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব তিন চাকার যান যত্রতত্র পার্কিংসহ যাত্রী উঠা-নামা করায় মহাসড়ক সংলগ্ন ষ্টেশনগুলোতে যানজট লেগেই থাকে। মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে দিব্যি যাত্রী উঠানামা করছে এসব অবৈধ পরিবহন। তবে কয়েক সিএনজি ও মাহিন্দ্রা গাড়ির চালকের সাথে আলাপে জানা যায়, হাইওয়ে পুলিশকে মাসিক মাসোহারা দিয়েই তারা স্লিপের মাধ্যমে বৈধভাবেই যাত্রী পরিবহন করছেন। বিশেষ করে চকরিয়া-কক্সবাজার মহাসড়কে এসব যানবাহনের দেখা মেলে সবচেয়ে বেশী। কোন রকম ভয়, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়া রাস্তায় দূরন্ত বেগে ছুটে যাওয়া ব্যাটারী চালিত এসব যানবাহনে বাড়ছে প্রতিনিয়ত দৈবাৎ দূর্ঘটনা। এসব যানবাহনকে সাইট দিতে গিয়ে মুলত বেশী দূর্ঘটনা ঘটছে বলে জানান কয়েকজন দুরপাল্লার বাসের চালক। অপরদিকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার পৌর শহরের প্রধান সড়কসহ অলিগলি ছেয়ে যাচ্ছে যন্ত্রচালিত অবৈধ টমটম ও ব্যাটারী রিক্সায়। অভিযোগ রয়েছে, একদিকে এসব ব্যাটারী চালিত যানবাহনের কারণে শহরের বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে। অপরদিকে বাড়ছে যানজট ও দৈবাৎ দূর্ঘটনা। সরেজমিনে, শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ রিক্সার পাশাপাশি যন্ত্রচালিত এসব অবৈধ টমটম ও ব্যাটারী রিক্সা চলছে সমানতালে। সংশ্লিষ্ট কতর্ৃপক্ষের কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এগুলোর সঠিক সংখ্যা জানাও দুষ্কর। এসব অবৈধ গাড়ির পেছনে পৌরসভার নম্বর প্লেটের পরিবর্তে অনেকটির গায়ে দেখা গেছে বিভিন্ন মালিকের নাম ও মোবাইল নাম্বার। জানতে চাইলে অনেক চালক জানায়, এটাই তাদের লাইসেন্স। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যাক্তিরা শিকার করেছেন এসব যানবাহনের অধিকাংশই অবৈধ। কিন্তু নীতিমালার সীমাবদ্ধতার অজুহাতে এগুলো নিয়ন্ত্রণের দায়দায়িত্ব নিতে চায় না সংশ্লিষ্ট কতর্ৃপক্ষ। অপরদিকে পৌর কতর্ৃপক্ষও এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ভাড়া নিয়েও চলছে এক ধরনের নৈরাজ্য। পৌর কতর্ৃপক্ষের ভাড়ার তালিকা না মেনেই এরা প্রতিনিয়ত নিজেদের ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে। ফলে যাত্রীদের সাথে ভাড়া নিয়ে চলছে মল্লযুদ্ধ। ওই রকম অসংখ্য অভিযোগ শহর অভ্যন্তরীন চলাচলরত রিক্সা, টমটমসহ ছোট বড় যানবাহনের বিরুদ্ধে। একটি বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা রমজান আলী জানান, আমি দেখেছি এসব ব্যাটারী চালিত যানবাহন ব্যস্ত সড়কে চলে অনেকটা দূর্ঘটনার ঝঁুকি নিয়ে। কারন অধিকাংশ চালকই অশিক্ষিত ও অদক্ষ। অন্যদিকে বিদ্যুৎচালিত অটোরিক্সার পাল ঢাকা-চট্রগ্রাম শহর থেকে বিতাড়িত হয়ে চলে এসছে কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলার আনাছে কানাছে। কেননা চট্রগ্রাম-ঢ়াকা শহরে বিদ্যুতের অপচয়ও যানজট নিরসনে এসব যানবাহন চালানো নিষিদ্ধ করেছিল প্রশাসন। এরপর থেকে চট্রগ্রাম শহরের অটোরিক্সা গুলো ঝঁাকে ঝঁাকে ধেয়ে আসছিল গ্রাম থেকে গ্রামে। এছাড়া এসব মোটর চালিত গাড়ির চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে অদক্ষ চালকের অসতর্কতার কারনে শহরে ইতিমধ্যেই ঝরে গেছে কলেজ পড়–য়া সম্ভাবনাময়ী কয়েকটি তাজা প্রাণ। হাইওয়ে সড়কে চলাচলরত এ সকল অবৈধ সিএনজি, ব্যাটারী চালিত টমটম ও রিক্সার রামরাজত্ব থেকে পরিত্রান পেতে সংশ্লিষ্ট কতর্ৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভূক্তভোগীরা।