সিবিএন ডেস্ক
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) ছড়িয়ে পড়ায় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চারটি দেশের অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ইরান ও ইতালির নাগরিকদের এখন থেকে ভিসা নিয়েই বাংলাদেশে আসতে হবে। বুধবার (৪ মার্চ) করোনা ভাইরাস নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর।

অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের বাইরে হটস্পট হিসেবে ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও জাপানকে শনাক্ত করেছে। এসব দেশে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাই সতর্কতা হিসেবে বিদেশি যাত্রী যারা আসেন, তাদের ক্ষেত্রে আরেকটু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই চার দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে আসতে হলে আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসা নিতে হবে। ভিসা নেওয়ার সময় তাদের করোনা সংক্রমণ নেই বা তারা যে কোয়ারেন্টাইন পার করেছেন এ ধরনের সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে এই ভিসা রেস্ট্রিকশান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অত্যাবশ্যকীয় না হলে এসব দেশে আমাদের নাগরিকদের যাতায়াত করতে নিরুৎসাহিত করছি।’

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ছয় জনের পরীক্ষা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১০২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তবে কারও শরীরে করোনার উপস্থিতি মেলেনি বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, হটলাইনে কলের সংখ্যা বাড়ছে, ১১০টির মধ্যে ৬৯টি কলই হচ্ছে করোনা সংক্রান্ত। আইইডিসিআরে এসে স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক পরামর্শও নিয়েছেন চার জন।

করোনা প্রস্তুতি কার্যক্রম বিষয়ে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে কমিটি আগে থেকেই ছিল, কিন্তু নতুন করে জাতীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে তিনটি মাল্টি সেক্টরাল কমিটি করা হয়েছে। তাদের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন প্রতিদিনই এ বিষয়ে আপডেটেড নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, মোট আক্রান্ত দেশের সংখ্যা চীনসহ ৭৩টি। করোনায় নতুন করে আক্রান্ত দেশের মধ্যে রয়েছে জর্ডান, এন্ডোরা, লাতভিয়া, সৌদি আরব, পর্তুগাল, সেনেগাল ও তিউনিসিয়া। বিশ্বজুড়ে এখন নিশ্চিত রোগীর সংখ্যা ৯০ হাজার ৮৭০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৩৩ জন এবং মারা গেছেন ৬৯ জন।

সেব্রিনা ফ্লোরা আরও জানান, চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৩০৪ জন, গত ২৪ ঘণ্টায় চীনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩০ জন, মারা গেছেন ৩১ জন। আর দেশটিতে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা মোট দুই হাজার ৯৪৬ জন।

চীনের বাইরের দেশগুলোতে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৫৬৬ জন, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৭৯২ জন। চীনের বাইরে মারা গেছেন ১৬৬ জন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৮ জন। চীনের তুলনায় অন্যান্য দেশে রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা এখন বেশি।

‘এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃসংবাদ যে ইতালিতে একজন বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি অসুস্থ, কিন্তু মাইল্ড অসুস্থ। তাকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে’, যোগ করেন অধ্যাপক সেব্রিনা।