বার্তা পরিবেশক
মহেশখালী উপজেলার হোয়ানকের একটি চিহ্নিত অপরাধী চক্র নিজেদের অপরাধকে ঢাকার জন্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক মৌজার আর এস-৫০ খতিয়ানের ৫৪.৭৪ একর জমির মালিক ১৯ জন। দেওয়ান আলীর পুত্র অলি মোহাম্মদের ৯.৫২ একর, অলি মোহাম্মদের পুত্র ইয়াকুব আলীর ১৫ একরসহ পিতা-পুত্র প্রায় ২৫ একর বা ৬৩ কানি জমির রেকর্ডীয় মালিক। সেইমূলে অন্যান্য অংশীদারদের সাথে সরসে নিরসে ভাগ বন্টন করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে আছি। ২০০১ সালে স্থানীয় একটি সালিশ বৈঠকে ভুলবশত বিচারকের অগোচরে আমাদের প্রাপ্য জমি থেকে ভাগ বন্টনের জমির পরিমাণ কম আসায় এবং বিএস খতিয়ানে রেকর্ড কম হওয়ায় ইতোমধ্যে বিজ্ঞ দেওয়ানী আদালতে অপর মামলা নং-৩৬৭/১৮ দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বাদী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সকল বিবাদী ও বিএস খতিয়ানের বিরুদ্ধে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে সরকার মহেশখালীতে কয়লা থেকে তাপ ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রায় ১৩ টি মৌজার সর্বশ্রেণীর জমি ২০১২ সাল থেকে ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ আদেশ জারি করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় এলএ মামলা নং-৪/২০১৩-২০১৪ সালে ১৩টি মৌজার প্রায় ৬ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের আওতায় আনে। প্রথমে জমির মালিকদের
৩ ধারা, ৪ ধারা নোটিশ প্রদান করে। পরে বিস্তারিত উল্লেখ করে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে ৬ দ্বারা নোটিশ প্রদান করা হয়।
কিন্তু একটি লোভি, সুবিধাবাদী ও জালিয়াতচক্র তথ্য গোপন করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নানামুখী ফন্দিফিকির করতে থাকে। চিহ্নিত চক্রটি ১৯৫৫ সালের ১৭০৬ নং দলিলকে ১২০৬ নাম্বার দলিল বানিয়ে বিক্রয় নিষিদ্ধ জমি থেকে তিনগুণ ক্ষতিপূরণ নেয়ার লোভ-লালসায় গত ৯/৯/২০১৮ ইং ১৫৫৯ নং দলিল ও ১০/৯/২০১৮ ইং ১৫৬০ নং দলিল সৃজন করে। হোয়ানক কালাগাজির পাড়ার মৃত হামিদুর রহমানের ছেলে কক্সবাজার এলএ অফিসের দালাল জাফর আলমের নির্দেশে গঠিত নানা অপকর্মের হোতা ওসমান গনি জালিয়াত চক্রের সদস্য কর্তৃক জাল দলিল নিয়ে ২০১৯ সালে ইয়াকুব আলীর পুত্র সিদ্দিক আহমদ, ফজল আহমদ, আফছার মিয়া, মোক্তার আহমদের লবণের মাঠ দখলে নেয় ওসমান বাহিনীর সদস্যরা। আর আমরা আইনের আশ্রয় গ্রহণ করি। জালিয়াত চক্রের মূল হোতা ওসমানের সৃজিত দলিল নিয়ে পর্যালোচনা করে ও জাল দলিল নিয়ে মহেশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসমানকে প্রধান আসামি করে সিআর মামলা নং-১২৪/১৯ দায়ের করি। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য কক্সবাজার পিবিআইকে নির্দেশ দেয় আদালত। দীর্ঘ তিন মাস তদন্তের পর গত ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি জাফরের নির্দেশে ওসমান বাহিনীর সদস্য মান্নান, বেলাল, দেলোয়ারসহ ১০/১২ জন লোক আমাদের লবণ মাঠে কর্মরতদের হামলা, লুটপাট ও লবণ মাঠ দখলের চেষ্টা চালায়। এতে সৈয়দ আলম ছৈয়দ আলম, মোঃ আলম মারাত্মক আহত হন। আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ছিদ্দিক আহমদের পুত্র মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে ১০/১২ জনকে আসামি করে মহেশখালী থানায় এজাহার জমা দেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থানার এসআই খোকন দাস সরেজমিন তদন্ত করেন এবং ঘটনার সত্যতা পেয়েছে বলে প্রতিবেদন জমা দেন।কিন্তু ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে জালিয়াত চক্রের অন্যতম সদস্য ওসমানগনীসহ তার বাহিনীর লোকজন ১৮ ফেব্রুয়ারি লবণের মাঠে অনধিকার প্রবেশ করে আমাদের পাঁচ একর লবণ জমির পলিথিন কেটে নিয়ে প্রায় ২০০ মণ উৎপাদিত লবণ কাঁচা পানির সাথে মিশিয়ে দিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
নানা অপকর্মের হোতা ওসমান জেল আজ হতে থাকলেও থেমে নেই তাদের অপকর্ম। একের পর এক প্রাণনাশের হুমকিসহ নিরীহ লোকজনদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে মহেশখালী থানা ও কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
তাছাড়া এলাকার নিরীহ লোকজনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনসহ অপপ্রচার চালাচ্ছে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা।
বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের বিষয়ে পত্রিকার সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকদের সর্তকতা অবলম্বনের অনুরোধ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে মাননীয় পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

মোঃ নোমান লেদু
সভাপতি, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ
হোয়ানক, মহেশখালী।