এ কে এম ইকবাল ফারুক, চকরিয়া
চকরিয়ায় ডাকাতের পিটুনীতে কৃষক সাহাব উদ্দিন খুনের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ র্ফেরয়ারি) সন্ধ্যায় নিহত সাহাব উদ্দিনের ভাই মহিউদ্দিন বাদি হয়ে ১০-১২জন অজ্ঞাতানামা আসামীদের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে কৃষক সাহাব উদ্দিন খুনের ঘটনা দুইদিন পার হতে চললেও এ খুনের ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গত রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুরাজপুর গ্রামে ক্ষেতে পাহারারত অবস্থায় সশস্র ডাকাত দলের পিটুনীতে নির্মমভাবে খুন হন কৃষক সাহাব উদ্দিন (২৭)। তিনি কাকারা উইনিয়নের দক্ষিণ কাকারা গ্রামের মো. শাহ আলমের ছেলে। এসময় মিনহাজ উদ্দিন (৩০) ও আব্দুল মান্নান (৪৫) নামে আরো দুই কৃষক ডাকাতের পিটুনীতে আহত হয়। তাদেরকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত মিনহাজ উদ্দিন বলেন, সোমবার রাতে তারা তিনজন হাতির তান্ডব থেকে রক্ষার জন্য সবজি ক্ষেত পাহারা দিচ্ছিলেন। রাত ১২টার দিকে ১০-১২ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত ওই সবজি ক্ষেত দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাত তাদের দেখে ফেলে। এসময় সশস্র ডাকাত দলের সদস্যরা তাদের মুখ হাত রশি দিয়ে বেঁধে পাহারারত সবজি ক্ষেতের সামান্য অদুরে তামাক ক্ষেতে ফেলে রেখে দক্ষিণ সুরাজপুরের দিকে চলে যায়। ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ডাকাতির পর সশস্র ডাকাত দলের সদস্যরা রাত ২টার দিকে পুনরায় সবজি ক্ষেতের দিক দিয়ে চলে যাওয়ার সময় অন্য মানুষ ভেবে কৃষক সাহাব উদ্দিন ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দেয়। এসময় সশস্র ডাকাত দলের সদস্যরা এগিয়ে এসে কৃষক সাহাব উদ্দিনসহ অন্যান্যদের বেদড়ক পেটাতে থাকে। ডাকাত দলের পিটুনীতে সাহাব উদিন চিৎকার দিলে সশস্র ডাকাত দলের সদস্যরা একের পর কোপাতে থাকে। এসময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্য হয়।

এদিকে ডাকাতের পিটুনীতে কৃষক সাহাব উদ্দিন খুন হওয়ার ঘটনায় তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। আয় রোজগারের একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি। স্বামীকে হারিয়ে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তার স্ত্রী। সাহাব উদ্দিনের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন তার পরিবার। এ নির্মম হত্যাকান্ডের ব্যাপারে থানা পুলিশের তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাহাব উদ্দিনের পরিবার। কৃষক সাহাব উদ্দিন খুনের ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে নিহতের পরিবার এবং এলাবাসীর মাঝেও দিনদিন ক্ষোভ বাড়ছে ।

মামলার বাদী মহি উদ্দিন জানান, আমার ভাইকে নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় অজ্ঞাতানা ১০-১২ জনকে আসামী দেখিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলেও মামলার আসামীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে এখনো কার্যকর প্রদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। হত্যা মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানান তিনি।

চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, কৃষক সাহাব উদ্দিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে ১০-১২জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলা দায়েরের পরপরই দূবৃত্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। দ্রুত সময়ে মধ্যে কৃষক সাহাব উদ্দিন খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওসি মো. হাবিবুর রহমান।